• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

পিরোজপুর সংবাদ

স্ত্রীর মরদেহ বাঁধে ফেলে যাওয়া সেই স্বামীর ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০২৩  

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে স্ত্রীর মরদেহ দাফন না করে বাঁধে ফেলে যাওয়া সেই খোকন মিয়া ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন। বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাত ৯টার টার দিকে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন গাইবান্ধা রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন পারভেজ।

এর আগে দুপুরে বেওয়ারিশ হিসেবে খোকনের মরদেহ উদ্ধার করে গাইবান্ধা পৌর কবরস্থানে দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম।

গতকাল মঙ্গলবার (২৯ নভেস্বর) বেলা ১১টার দিকে বোনারপাড়ার ডিমলা পদুমশহর রেল ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় সান্তাহার-বুড়িমারীগামী করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়।

নিহত খোকন গাইবান্ধা সদর উপজেলার হাটলক্ষ্মীপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে বলে জানা গেছে। তিনি সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের হিয়ালী গ্রামে নানার বাড়িতে থাকতেন।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে গাইবান্ধা রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন পারভেজ বলেন, ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ খোকনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ হস্তান্তর করতে গিয়ে তার কোনো স্বজনকে পাওয়া যায়নি। তার এলাকার কেউ মরদেহের দায়িত্ব নিয়ে দাফন করতে রাজি হননি। পরে আমরা বেওয়ারিশ লাশের দায়িত্ব নেওয়া সংগঠন আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করি। খোকন মানসিক প্রতিবন্ধী। দুর্ঘটনাবশত তার মৃত্যু হয়েছে।

আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের গাইবান্ধার উপ-পরিচালক শাহজাহান খন্দকার বলেন, দুপুর ১২টার দিকে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে তার মরদেহ গাইবান্ধা পৌর কবরস্থানে আমরা দাফন করেছি। ট্রেনে কাটা পড়ে তার মৃত্যু হয়েছিল বলে রেলওয়ে পুলিশ মারফত আমরা জেনেছি।

প্রসঙ্গত, গত ২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের খামার বাগছী এলাকা বাঁধ থেকে খোকন মিয়ার স্ত্রী শারমিন খাতুনের (২৩) মরদেহ উদ্ধার করে সাদুল্লাপুর থানা পুলিশ।

ওই সময় সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, শারমিন  দীর্ঘদিন থেকে ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য খোকন মিয়া গ্রামে গ্রামে ভ্যান যোগে সাহায্য (টাকা) তুলে বেড়াতেন। যে অর্থ পেতেন তা দিয়ে স্ত্রীর চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের সংসার চলতো। প্রতিদিনের মতো স্ত্রীকে নিয়ে তিনি বের হন। পরে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের ভগবানপুর গ্রামে গেলে তার স্ত্রী মারা যান। পরে ওই এলাকার লোকজন আর্থিক সহযোগিতা করে মরদেহ দাফনের জন্য খোকনকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু খোকন স্ত্রীর মরদেহ দাফন না করে খামার বাগছী এলাকার বাঁধে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। পরে সকালে স্থানীয়রা এক নারীর পরিত্যাক্ত মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।