• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

পিরোজপুর সংবাদ

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২৩  

সুস্থতা আল্লাহ তাআলার অনেক বড় নেয়ামত। অসুস্থতাও আল্লাহর নেয়ামত। অসুস্থতার মাধ্যমে আল্লাহ বান্দাকে পরীক্ষা করেন। তার গুনাহ মাফ করেন। বিভিন্ন হাদিসে রোগ-শোক ও বালা-মসিবতের তাৎপর্য ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।

অসুস্থতা দেহের জাকাত স্বরূপ। এতে শরীর গুনাহমুক্ত হয়, পাক-পবিত্র হয়। আল্লাহর কাছে বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি হয়। ভবিষ্যত জীবনের জন্য উপদেশ গ্রহণের সুযোগ তৈরি হয়।

হযরত আলী রা. বর্ণনা করেন, আমি রসুল সা. কে বলতে শোনেছি, যে ব্যক্তি সকালবেলা কোনো অসুস্থ মুসলমানকে দেখতে যায়, সত্তর হাজার ফেরেশতা বিকেল পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করতে থাকে। আর বিকেলে রোগী দেখতে গেলে পরদিন সকাল পর্যন্ত সত্তর হাজার ফেরেশতা দোয়া করে। (সুনানে তিরমিজি ৯৬৭)

অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে গিয়ে পাঠ করার মতো কয়েকটি দোয়া নিচে দেয়া হলো।
 
لَا بَأْسَ طَهُوْرٌ إِنْ شَآءَ اللّهُ উচ্চারণ: লা-বাসা তুহুরুন ইংশা-আল্লহ। অর্থ:। ভয় নেই, আল্লাহ চান তো তুমি খুব শীঘ্রই ভালো হয়ে যাবে। এ রোগ তোমার পবিত্র হবার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

 

أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ وَاشْفِ أَنْتَ الشَّافِىْ لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءٌ لَا يُغَادِرُ سَقَمًا উচ্চারণ: আযহিবিল বা’স, রব্বান নাস, ওয়াফি আংতাশ শা-ফী লা- শিফা-আ ইল্লা- শিফাউকা শিফাআন লা- ইউগাদিরু সাক্ক-মা। অর্থ: হে মানুষের রব! এ ব্যক্তির রোগ দূর করে দিন৷ তাকে নিরাময় করে দিন৷ নিরাময় করার মালিক আপনিই। আপনার নিরাময় ছাড়া আর কোনো নিরাময় নেই। এমন নিরাময় যা কোন রোগকে বাকী রাখে না।
 
আরেকটি দোয়া রয়েছে।  أَسْأَلُ اللّهَ الْعَظِيمَ رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ أَنْ يَّشْفِيَكَ উচ্চারণ: আস্আলুল্লহাল ‘আযিম রব্বাল ‘আরশিল ‘আযিম আই ইয়াশ্ফিয়াকা। অর্থ: আমি মহান আল্লাহর দরবারে দু’আ করছি তিনি যেন আপনাকে আরোগ্য দান করেন, যিনি মহান আরশের রব।
 
হযরত আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার একজন অসুস্থ বেদুইনকে দেখতে গেলেন। আর কোনো রোগীকে দেখতে গেলে তিনি বলতেন, (লা-বাসা তুহুরুন ইংশা-আল্লহ) ভয় নেই, আল্লাহ চান তো তুমি খুব শীঘ্রই ভালো হয়ে যাবে। এ রোগ তোমার পবিত্র হবার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এ নিয়ম অনুযায়ী তিনি বেদুঈনকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, ‘ভয় নেই, তুমি ভালো হয়ে যাবে।
 
আল্লাহর ইচ্ছায় এটা তোমার পবিত্র হবার কারণ হয়ে যাবে। তার কথা শুনে বেদুঈন বলল, কক্ষনো নয়। বরং এটা এমন এক জ্বর, যা একজন বৃদ্ধ লোকের শরীরে ফুঁটছে। এটা তাকে কবরে নিয়ে ছাড়বে। তার কথা শুনে এবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আচ্ছা, তুমি যদি তাই বুঝে থাক তবে তোমার জন্য তা-ই হবে। (বুখারি ৩৬১৬, ৫৬৫৬, ৫৬৬২, মিশকাত ১৫২৯)

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ إِذَا اشْتَكى مِنَّا إِنْسَانٌ مَسَحَه بِيَمِينِه ثُمَّ قَالَ: «أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ وَاشْفِ أَنْتَ الشَّافِىْ لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءٌ لَا يُغَادِرُ سَقَمًا». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
 
হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমাদের কারো অসুখ হলে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার ডান হাত রুগীর গায়ে বুলিয়ে দিয়ে বলতেন, (আযহিবিল বা’স, রব্বান নাস, ওয়াফি আংতাশ শা-ফি লা- শিফা-আ ইল্লা- শিফাউকা শিফাআন লা- ইউগাদিরু সাক্ক-মা।) অর্থ: হে মানুষের রব! এ ব্যক্তির রোগ দূর করে দিন। তাকে নিরাময় করে দিন। নিরাময় করার মালিক আপনিই। আপনার নিরাময় ছাড়া আর কোনো নিরাময় নেই। এমন নিরাময় যা কোন রোগকে বাকী রাখে না। (বুখারি ৫৭৫০, মুসলিম ২১৯১, ইবনু মাজাহ ৩৫২০, মিশকাত ১৫৩০)

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَعُودُ مُسْلِمًا فَيَقُولُ سَبْعَ مَرَّاتٍ: أَسْأَلُ اللّهَ الْعَظِيمَ رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ أَنْ يَّشْفِيَكَ إِلَّا شُفِيَ إِلَّا أَنْ يَكُونَ قَدْ حَضَرَ أَجَلُه». رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ
 
হযরত আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, এক মুসলিম তার এক অসুস্থ মুসলিমকে দেখতে গিয়ে যদি সাতবার বলে, আস্আলুল্ল-হাল ‘আযিম রব্বাল আরশিল আযিমি আই ইয়াশ্ফিয়াকা। অর্থ: আমি মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করছি তিনি যেন আপনাকে আরোগ্য দান করেন, যিনি মহান আরশের রব)। তাহলে তাকে অবশ্যই আরোগ্য দান করা হয় যদি না তার জীবনের শেষ সময় উপস্থিত হয়। (আবু দাউদ ৩১০৬, তিরমিজি ২০৮৩, মিশকাত ১৫৫৩)

হাদিসে রোগী দেখার অসংখ্য ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। হজরত আলী রা. বর্ণনা করেন, আমি রসুল সা. কে বলতে শোনেছি, যে ব্যক্তি সকালবেলা কোনো অসুস্থ মুসলমানকে দেখতে যায়, সত্তর হাজার ফেরেশতা বিকেল পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করতে থাকে। আর বিকেলে রোগী দেখতে গেলে পরদিন সকাল পর্যন্ত সত্তর হাজার ফেরেশতা দোয়া করে। (সুনানে তিরমিজি ৯৬৭)