• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

পিরোজপুর সংবাদ

‘চোকার্স’ নামের মর্যাদা টিকিয়ে রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০২৩  

এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়া ১৩ বিশ্বকাপ আসরের মধ্যে ৯ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে পাঁচ সেমিফাইনাল খেলা দল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে কোনোবারই এই পরীক্ষায় পাশ করতে পারে না প্রোটিয়া। তাই তাদের বিশ্বক্রিকেটে ‘চোকার্স’ নামে ডাকা হয়।
চোকার্সের অর্থ হলো যারা দক্ষ এবং শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে যায়। যা কিনা একমাত্র তাদের সঙ্গেই যায়। কেননা প্রতি বিশ্বকাপেই শুরু থেকে বড় স্বপ্ন দেখিয়ে এই রাউন্ড রবিনে এসেই থেমে যায় তাদের দৌড়। এই নিয়ে পাঁচ বার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

শুরুটা ১৯৯২ সাল থেকে। সে বার প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে আসে তারা। আর এসেই দাপটের সঙ্গে খেলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। তবে সেখানে তারা আটকে যায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। এরপর ১৯৯৬ বিশ্বকাপে দাপটের সঙ্গে খেলে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সবাই ভেবেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ একেবারে উড়ে যাবে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা এই ম্যাচে হেরে যায়।

এছাড়া ১৯৯৯ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া বিশ্বকাপে তো জেতা ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায় তারা। ঐ ম্যাচে অ্যালান ডোনাল্ডের রানআউটের জেরে অস্ট্রেলিয়ার কাছেই হেরেছিল প্রোটিয়ারা। পরে ২০০৩ সালে ঘরের মাঠে আয়োজিত বিশ্বকাপে সুপার এইটের ম্যাচে শেষপর্বের ম্যাচেও বৃষ্টিবিঘ্নের জেরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জিততে না পেরে এক দিনের আন্তর্জাতিকের বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে।

২০০৭ সালে সেমিফাইনালের পর ২০১১ সালে ভারতের মাটিতে আয়োজিত শেষ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছিল প্রোটিয়ারা। আর ২০১৫ বিশ্বকাপের কথা তো ক্রিকেট প্রেমিরা ভুলবে না কখনো। কারণ সেই আসরের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচটিতে অদ্ভুতুড়ে অনেক কিছুই ঘটে।

দুর্দান্ত ফিল্ডার হিসেবে পরিচিত এবি ডি ভিলিয়ার্স-কোরি এন্ডারসনের সহজ রানআউট মিস করেন, যিনি পরবর্তী সময় গ্র্যান্ড এলিয়টের সঙ্গে শতরানের পার্টনারশিপ করেন। এছাড়া উইকেট কিপার ডি কক আরেকটি সহজ রানআউট মিস করেন। এগুলো ছাড়াও ম্যাচে আরো কিছু ক্যাচ মিসের ঘটনা ঘটে। শেষপর্যন্ত শেষ ২ বলে যখন ৫ রানের প্রয়োজন ছিল, তখন সময়ের সেরা বোলার ডেল স্টেইনের বলে এলিয়ট দুর্দান্ত একটা ছক্কা মেরে আবারও প্রমাণ করেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকা বড় টুর্নামেন্টে আসলেই চোকার্স।

তবে ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল আসর নিশ্চিত করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ঐ আসরে মাঠে তাদের ছন্নছাড়া পারফরম্যান্স করতে দেখা গিয়েছিল যদিও শেষ অবদি ছন্দে ফিরলেও কাজ হয়নি। সেই আসরের সব কিছু ভুলে চলমান আসরে ভারতে পা রেখে প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাণ্ডব চালিয়ে শুরু করে। এক ম্যাচেই ক্রিকেটের রেকর্ড বইয়ে তোলপাড় চালায়।

দলে ডি কক, মিলার, ক্লাসেন, ডুসেনের মতো মারকুটে ব্যাটাররা যেন সব এক সঙ্গে নিজেদের ফরম প্রদর্শন করছিল। আসরের প্রথম পর্বে পুরোটা সময়ই তাদের এই রূপে দেখা গিয়েছিল। তবে শেষ অবদি পরিণতি ঐ একই হয়েছে তাদের। আবারও ঐ সেমি থেকেই বিদায়। মজার বিষয় হচ্ছে এবারও তাদের আটকেছে অস্ট্রেলিয়া। ১৯৯৯, ২০০৭ এরপর ২০২৩-এ এসেও প্রোটিয়ারা পারেনি তাদের বাধা পেরুতে। এতে করে ‘চোকার্স’ নামটি যে তাদের সঙ্গেই যায় তা আবারও প্রমাণ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।