• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
চাকরির পেছনে না ছুটে যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান ‘সামান্য কেমিক্যালের পয়সা বাঁচাতে দেশের সর্বনাশ করবেন না’ যত ষড়যন্ত্র হোক, আ.লীগ সংবিধানের বাইরে যাবে না: ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ

করপোরেট অফিসে ঢুকে ল্যাপটপ চুরিই তার নেশা

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০২১  

স্যুট-টাই পরে হাতে ব্যাগ নিয়ে সকালে বাসা থেকে বের হন। উদ্দেশ্য রাজধানীর করপোরেট অফিস পাড়া। সবাই জানেন, এই ব্যক্তি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করেন। তাই সকালে ফিটফাট হয়ে অফিসে যান। সত্যিই তিনি অফিসে যান, তবে কাজ করতে নয়, ল্যাপটপ চুরি করতে। সকাল সকাল অফিসে গিয়ে ল্যাপটপ চুরি করাই তার নেশা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) হারুন অর রশীদ নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ডিবি।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডজন খানেক ল্যাপটপ চুরির অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তিনি অসংখ্য অফিসে প্রবেশ করেন, ল্যাপটপ চুরি করে কম দামে বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করেন। চুরির একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজও উদ্ধার করা হয়েছে।’

গত বছরের ৫ জানুয়ারি, সকাল ৮টা ২২ মিনিট। হাতে ব্যাগসহ এই ব্যক্তিকে রাজধানীর গুলশানের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিসে প্রবেশ করতে দেখা যায়। তিনি লিফট থেকে নেমে পায়ে হেঁটে বিভিন্ন ফ্লোরে অফিসের দরজা খুলে খুলে উকি দিচ্ছেন। হঠাৎ একটি দেরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন। ৫ মিনিট পর  বের হয়ে আসেন। তার ব্যাগটি এবার ভারি। পরে জানা যায়, ওই অফিস থেকে ল্যাপটপ চুরি হয়েছে। তারা পরে থানায় অভিযোগ করেন।

গুলশান ও বনানীতে এমন অসংখ্য ল্যাপটপ চুরির ঘটনা তদন্তে করতে গিয়ে ডিবি পুলিশ এই ব্যক্তির সম্পৃক্ততা পায়।

সকালে করপোরেট অফিসগুলো খোলার শুরুর সময়টা টার্গেট করেন হারুন। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে বিভিন্ন অফিসে প্রবেশ করেন। এ সময় অফিস স্টাফরা অফিস পরিষ্কার করার কাজে ব্যস্ত থাকেন। সেই ফাঁকে তিনি অফিসে ঢুকে ল্যাপটপ নিয়ে বের হয়ে চলে আসেন। তার হাতে সবসময় ব্যাগ থাকে। নিজেও অনেক পরিপাটি হয়ে অফিসগুলোতে যান বলে কেউ তাকে সন্দেহ করেন না। তিনি সুযোগ বুঝে ফাঁকা ডেস্ক থেকে ল্যাপটপ নিয়ে চলে আসেন।

হারুণ কখনও স্যুট-প্যান্ট আবার কখনও পাজামা-পাঞ্জাবি পরে ভদ্র বেশে অফিসে অফিসে ঘুরে বেড়ান। দাঁড়ি টুপি পরা এমন মানুষকে কখনও কেউ সন্দেহ করতেন না। সেই সুযোগটাই নিয়েছেন তিনি।

গত দুই বছর ধরে করপোরেট অফিস থেকে ল্যাপটপ চুরির কাজ করে যাচ্ছেন হারুন অর রশীদ। এ সময়ের মধ্যে তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েকশ’ ল্যাপটপ চুরি করেছেন। চুরি করা ল্যাপটপ তিনি বিক্রি করেন মিরপুরের শাহ আলী মার্কেটের এক দোকানদার মাসুমের কাছে। তাকেও গ্রেফতার করেছে ডিবি।

উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘ল্যাপটপ চুরির অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা তদন্ত শুরু করি। তবে ল্যাপটপ চুরি হলে এটা উদ্ধার করা কিছুটা কঠিন। কারণ ল্যাপটপের অবস্থান ও ব্যবহারকারী শনাক্ত করা টাফ। তবে আমরা প্রতিটি ঘটনা তদন্তে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি, তাই তাকে গ্রেফতার করতে পেরেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দামি ল্যাটপট একদিন একটা চুরি করলেই তার ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় হয়ে যেত। ৪০-৫০ হাজার টাকার ল্যাপটপ তিনি ১০-১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন।

হারুনের বিরুদ্ধে ল্যাপটপ চুরি সংক্রান্ত ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় এক ডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে; যা পুলিশ তদন্ত করছে।