• রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

মঠবাড়িয়ায় ৬ সুবর্ণ নাগরিকের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ৬ সুবর্ণ নাগরিকের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ। জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন সমাজ কল্যান মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল কাইয়ূম আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি শিশুসহ ৬ জনের হাতে এ হুইল চেয়ার তুলেদেন। এসময় উপজেলা প্রতিবন্ধী বষিয়ক কর্মকর্তা মো. ফিরোজ আলম, থ্রাপি সহকারী শরীফুল ইসলাম ও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলার বাদুরা গ্রামের দিন মজুর বাবা মো. দেলোয়ার ফরাজী মা চম্পা বেগম এর বড় সন্তান জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী দশ বছর বয়সী ইব্রহীমের সারা দিন ঘরে শুয়ে বসে জীবন কাটে। কখনো বা মায়ের কোলে, কখনো বা ঘরের বারান্দার মেজেতে, আবার কখনো প্লাস্টিক ঝুড়িতে ইব্রাহীম বেড়ে ওঠে। দরিদ্র দিন মজুর পরিবারের সন্তান ইব্রাহীম বিকলঙ্গ হয়ে জন্ম গ্রহণ করে। দিন মজুর পরিবারের ভাত যোগার করতেই অনেক কষ্ট। সেখানে হুইল চেয়ার কেনা ছিল একটি দুঃস্বপ্ন। মায়ের কোলে চড়ে আসা ইব্রাহীমকে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ইব্রাহীম চলা ফেরা করার জন্য অত্যাধুনিক হুইল চেয়ার প্রদান করা হয়। আজ দশ বছর বয়সে ইব্রাহীম হুল চেয়ারের বসে নিজ গ্রামে বাড়িতে ফিরতে পেরে আনন্দ উল্লাস করতে থাকে।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেলোয়ার ফরাজী ও চম্পা দম্পতির ঘরে প্রথম ইব্রাহীম অস্বাভিক শারীকি সমস্যা নিয়ে জন্ম হয়। কোন রকম চলা ফেরা বা উঠে দাঁড়াবার মত কোন শক্তি বা সক্ষমতা ছিল না। এমন অবস্থায় বিদ্যালয় লেখা পড়াও সুযোগ পায়নি ইব্রাহীম। রাত পোহালে দরিদ্র দিন মজুর বাবা দেলোয়ার ফরাজী কাজে বের হোতেন মা বিকলঙ্গ ইব্রাহিমকে লাল পালন করে আসছিলেন। শারীরিকভাবে অক্ষম ইব্রাহীমকে নানা যায়গায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলেও সে আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পানেনি। তাকে তার মা একটি প্লাস্টিকের ঝুড়িতে করে বিভিন্ন স্থানে স্থান্তর করতো।

বিকলঙ্গ ছেলের চলা ফেরার জন্য একটি আধুনিক হুইল চেয়ার পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পরেন শিশুটির মা চম্পা বেগম। তিনি বলেন, আমি কোন দিন ভাবি নাই আমার ছেলে হুইল চেয়ারে চড়বে বা চলা ফেরা করবে। জন্ম থেকেই অনেক কষ্টের মধ্যে তাকে লালন পালন করে আসছি। অভাবের সংসাদের হুল চেয়ার কেনার মত পয়সা আমাদের ছিল না। প্রশাসনকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রতিবন্ধী বষিয়ক কর্মকর্তা মো. ফিরোজ আলম বলেন, ইব্রাহীমের পরিবারটি অত্যান্ত দরিদ্র এবং শিশুটি চলা ফেরা করতে পারতো না। তাকে চেয়ার দেয়া হয়েছে এটা পাওয়া তার অধিকার। শিশুটি চেয়ারে বসে বাড়ি যাচ্ছে এতে আমরা আনন্দিত।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল কাইয়ূম বলেন, প্রতিবন্ধীরা অবহেলিত নয়। তাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে  সরকার নানামুখি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এতে গ্রামঞ্চলের প্রতিবন্ধীরা উপকৃত হচ্ছেন। এই শিশুটিসহ আরও ছয়জনের হাতে হুইল চেয়ার তুলে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। সরকারের মানবিক এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে।