কেন্দ্র পাহারায় থাকা নিরাপত্তা কর্মীদের ব্যবহারের পরিকল্পনা

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বিএনপি। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য `নীলনকশা’য় সন্নিবিষ্ট করা হয়েছে নানান ছক। আর তা বাস্তবায়নে নির্বাচনের দিন ‘কেন্দ্র পাহারায়’ থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ব্যবহার করার পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছে তারেক রহমান। জানা গেছে, নির্বাচনী বিভিন্ন কেন্দ্র পাহারারত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ঘুষ প্রদান করে তাদেরকে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার গোপন পরিকল্পনার চূড়ান্ত নকশাও প্রস্তুত করা হয়েছে। বিএনপির নয়াপল্টন পার্টি অফিস সূত্রে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদিকে এমন পরিকল্পনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ রাজনীতি সচেতন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

সূত্র জানায়, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় যেতে চাইলেও তা বাস্তবে রূপান্তরিত করা সম্ভব নয় বলে মনে করছে দলটি। কেননা, বিএনপির মধ্যে যে অন্তঃকোন্দল চলছে তাতে আপাতদৃষ্টিতে নির্বাচনী মাঠ নিজেদের দখলে বলে নেতারা বিভিন্ন বক্তব্য প্রদান করলেও পরিস্থিতি সেরকম নয়। আর তাই যেকোন উপায়ে ক্ষমতায় যেতে অন্তত ডজন খানেক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বিএনপি। আর এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরাসরি নির্দেশ এসেছে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের কাছ থেকে। তারেক রহমানের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে এরইমধ্যে দলের শীর্ষ নেতাদের তিন দফা বৈঠকও হয়েছে। এতে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ উপস্থিত ছিলেন অন্তত ১৩ জন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং দলের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের ব্যক্তিগণ।

বৈঠকে উপস্থিত থাকা একজন নেতার ব্যক্তিগত সহকারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ভোটের দিন দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রে অন্তত ১০ হাজার নেতাকর্মীদের ছড়িয়ে দেয়া হবে। তারা প্রত্যেক কেন্দ্রে পাহারারত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কৌশলে ঘুষ প্রদান করে নির্বাচনী ফলাফল বিএনপির পক্ষে নিতে বিভিন্ন কারচুপির আশ্রয় নেবে। প্রয়োজনে কেন্দ্রে অবস্থিত প্রিজাইডিং অফিসারসহ দায়িত্বরত কর্মকর্তাদেরও উৎকোচ হিসেবে বৃহৎ অংকের অর্থ প্রদান করার নিশ্চয়তা দেয়া হবে। যাতে কেন্দ্র দখল করে নির্বাচনী ফলাফল নিজেদের পক্ষে আনা সহজ হয়।

এমন পরিকল্পনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিভুরঞ্জন সরকার বলেন, পরিকল্পনাটি খুবই ভয়ংকর। এটি যদি বাস্তবায়ন করা হয় তবে তা নির্বাচনী সংস্কৃতির উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। অন্যদিকে এটি ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে স্থান করে নেবে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে দেখছি, বিএনপি তথা তারেক রহমান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাকি একাধিক মাস্টার প্ল্যান হাতে নিয়েছে। এখন পর্যন্ত যেগুলো জেনেছি তা ভীষণ উদ্বেগ ও আতঙ্কের বিষয়। তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সজাগ থাকতে হবে। কারণ সুষ্ঠু নির্বাচন একটি দেশে গণতন্ত্রের অন্যতম প্রতীক। এখানে কুপরিকল্পনার কোন স্থান নেই।

সূত্র বলছে, এরইমধ্যে বিএনপির তৃণমূল থেকে বাছাইকৃত ১০ হাজার কর্মীর নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকাটি কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে হস্তান্তরও করা হয়েছে। এখন শুধু নির্বাচনের দিনের জন্য অপেক্ষা!