• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

নামাজে অধিক মনোযোগী হওয়ার উপায়

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৯  

নামাজে একাগ্রতা না থাকলে তা বান্দার কোনো উপকারে আসবে না। শুধু নামাজ নয় বান্দার যে কোনো ইবাদত-বন্দেগিতে যদি ইখলাস তথা একনিষ্ঠতা না থাকতে সে ইবাদত গ্রহণযোগ্য নয়।তাই নামাজে একাগ্রতা সৃষ্টিতে তথা মনোযোগী হতে কিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখা উচিত।

মানুষের মন কখনো বেকার থাকে না; হয় সালাতে থাকে, না হয় অন্যত্র থাকে। সালাতে দাঁড়ানো থেকে রুকুতে যাবার আগে, রুকু থেকে সিজদায় যাবার আগে কিংবা সিজদা থেকে বসার আগে, প্রত্যেক অবস্থান পরিবর্তনের পূর্বে মনের অবস্থা দেখে নেয়া। তারপরেও যদি সালাতে মনোযোগ না থাকে, তাহলে তাসবীহগুলো মনোযোগের সাথে আরেকবার পড়তে হবে; এভাবে যতবার মনোযোগ না আসবে, ততবার পড়তে থাকলে এক পর্যায়ে সালাতে মনোযোগ ফিরে আসতে বাধ্য হবে।

 সালাতে যা কিছু পাঠ করা হয় তার অর্থ বুঝতে চেষ্টা করা। এটি অন্তরের উপস্থিতিকে আরো দৃঢ় করে। সালাতে সূরা ফাতিহা, বিভিন্ন কিরাত ও তাসবীহগুলোর অর্থ যখন জানা হয়ে যাবে তখন তা ভালোভাবে অনুধাবনের চেষ্টা করতে হবে। কোনো কোনো আলেম সালাতে যতবার সূরা ফাতেহা পাঠ করেন, ততবার তাদের নিকট ভিন্ন ভিন্ন অর্থ অনুধাবন হয়, তাঁরা ভিন্ন ভিন্ন দিক-নির্দেশনা পান।

 সালাতে আল্লাহর প্রতি ‘তাযীম’ বা ভক্তি-শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা। সাধারণত দুটি কারণে মনে আল্লাহর প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা সৃষ্টি হয়। এক. আল্লাহতায়ালার প্রতাপ ও মাহাত্ম্যের জ্ঞান লাভ করলে; যার এ জ্ঞান নেই, তার মন আল্লাহর সামনে নত হয় না। দুই.  নিজের অজ্ঞতা-হীনতা-নীচতা-সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানা থাকলে মানুষ আল্লাহকে মন থেকে ভক্তি-শ্রদ্ধা করতে পারে।

 সালাতে দাঁড়িয়ে আল্লাহতায়ালাকে ভয় করা। কেবল জ্ঞান থেকেই ভয়ের উত্পত্তি সম্ভব; যে-মানুষ যত জ্ঞানী, তিনি আল্লাহকে তত ভয় করেন। কোরআনে বলা হয়েছে-‘আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল তাঁকে ভয় করে’।

 সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ আশা করা। আল্লাহতায়ালা বলেন-‘তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর’ (সূরা বাক্বারা-৪৫)। সাধারণত সালাতের সময় পার্থিব চিন্তা এসে মানুষের মনে ভিড় জমায়; কিভাবে পার্থিব সফলতা অর্জন করা যায়, মানুষ কেবল সে চিন্তাই করে। তারা পার্থিব কল্যাণের চিন্তায় এতই ব্যস্ত থাকে যে, সালাতে মন বসাতে পারে না। অথচ, জ্ঞানীরা সালাতের মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ আশা করে, যেখানে চাহিদা অনুযায়ী সফলতা অর্জন করার সম্ভাবনা শতভাগ নিশ্চিত।

 সালাতে ‘হায়া’ বা লজ্জাশরম নিয়ে আসা। গ্রামের মানুষ শহরে এসে যদি শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে না পারে, তাহলে লজ্জাবোধ করে। অথচ আল্লাহর সামনে সালাতে দাঁড়িয়ে মানুষ শতশত ভুল করে, কিন্তু লজ্জাবোধ করে না।