• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

ভারতের কাছেও হার বাংলাদেশের

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৮ আগস্ট ২০১৯  

মাঠ বদল হয়েছিল, উস্টারশায়ারের কিডারমিনস্টার থেকে ওল্ড এলিজাবেথান। কিন্তু ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি বাংলাদেশ শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলের। ওল্ড এলিজাবেথান ক্লাবে সুন্দর মাঠে ভারতীয় শারীরিক প্রতিবন্ধী দলের কাছে ৫৯ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।

আফগানিস্তানের মতোই ভারতীয় শারীরিক প্রতিবন্ধী দল আজ বাংলাদেশকে চোখে আঙুল দিয়ে দুর্বলতার জায়গাগুলো দেখিয়েছে। আসলে শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্রিকেটে যে বাংলাদেশ অনেকটাই পিছিয়ে আছে, সেটি অন্য দলগুলোর সংস্পর্শে আসলেই বোঝা যাচ্ছে। ভারতীয় শারীরিক প্রতিবন্ধী দলটি ঠিক তাদের ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) অধীনে নয়। বরং শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্রিকেটের জন্যই ভারতে তৈরি হয়েছে আলাদা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। ইংল্যান্ডে ফিজিক্যাল ডিজঅ্যাবিলিটি ওয়ার্ল্ড সিরিজে খেলতে আসা ভারতীয় দলটা তাদেরই প্রতিনিধি। তবে বিসিসিআই দূর থেকে সবকিছুর দেখভাল করে। দলটির স্বকীয়তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে তারাই। তবে প্রতিযোগিতায় যে তারা শিরোপা জিততেই এসেছে, সেটি তারা পদে পদে বুঝিয়ে দিচ্ছে। দলটির ফিজিও রঞ্জি ট্রফিতে দীর্ঘ দিন মুম্বাই দলের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাদের আছে কম্পিউটার অ্যানালিস্ট। ৩০ জনের বিশাল দল নিয়ে ইংল্যান্ডে আসা ভারতীয় শারীরিক প্রতিবন্ধী দলে আছে প্রতিটি বিভাগেই আলাদা আলাদা কোচ, দলে পৃষ্ঠপোষকতারও অভাব নেই।

বাংলাদেশ আজ পিছিয়ে পড়েছে ম্যাচ টেম্পারামেন্টেই। ব্যাটে-বলে তো বটেই, মাঠের অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়গুলোতেও বাংলাদেশ যে পিছিয়ে, সেটা বারবারই চোখে পড়েছে। টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং না নিয়ে আজ বোলিং নিয়েছিল বাংলাদেশ। কোচ রাশেদ ইকবাল এর ব্যাখ্যায় বললেন, ‘উইকেটে যথেষ্ট ঘাস ছিল দেখেই ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া। তা ছাড়া প্রচুর বাতাসও ছিল। আমরা চেয়েছিলাম ব্যাটিংয়ের জন্য একটু কঠিন কন্ডিশনটির পরিপূর্ণ সদ্ব্যবহার।’
কিন্তু তেমনটি হয়নি। খানিকটা বোলিং উপযোগী কন্ডিশনের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। দুই উদ্বোধনী বোলার আকবর হোসেন ও মনির হোসেন দুজনেই ছিলেন খরচে। আকবর ২ উইকেট নিলেও ৪ ওভারে রান দিয়েছেন ৩৯। মনির ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। অন্যান্য বোলাররাও তেমন কিছু করতে পারেননি। বাঁহাতি পেসার রাসেল শিকদার ১ উইকেট নিয়েছেন ৪ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে। অপূর্ব কুমার পাল ভালো। বোলিং করেন ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে। বাকি বোলার, মনিরুজ্জামান কিংবা মাহফুজ—দুজনেই রান দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ভারত ৫ উইকেট হারিয়ে করে ১৮১ রান। সুগনেশ মহেন্দ্ররান ৩৫ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলেন ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায়। বিক্রান্ত কানি করেন ২১ বলে ২৭ (২ চার ও ১ ছক্কা)। কুনাল পাহানসে, ওয়াসিম খান, জিতেন্দ্র নাগারাজু বাংলাদেশের বোলারদের যথেষ্ট ভুগিয়েছেন। এই তিন ভারতীয় ব্যাটসম্যানের সংগ্রহ যথাক্রমে ২২ বলে ২২, ১২ বলে ১৮ ও ৮ বলে ১৭। ব্যাটসম্যানদের ভালো ব্যাটিংয়ে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১৮১।

১৮২ রানের লক্ষ্য টি-টোয়েন্টিতে কঠিন। শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্রিকেটে আরও কঠিন। ২৩ রানে বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারায়। আউট হন তানভীরুল ইসলাম। ৩৪ রানে ফেরেন শারীফুল ইসলাম। এরপর জাভেদ ভূঁইয়া ও শাহরিয়া শামীমের মধ্যে জুটি গড়ে ওঠে। এ জুটি ভালোই এগোচ্ছিলেন। কিন্তু ১০ দশমিক ১ ওভারে দলীয় ৭৮ রানের মাথায় ফেরেন জাভেদ। তিনি ২৭ বলে ৩৩ রান করে বড় ভরসা হয়ে ছিলেন। এরপর শাহরিয়া শামীম ৩৩ রানে ফিরলে আর কোনো ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারেননি। মেরেও খেলতে পারেননি। অপূর্ব ১৫ বলে ১২ আর মাহফুজ ১৬ বলে ১২ রান করে পরাজয়ের ব্যবধানই কেবল কমিয়েছেন। বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত নিজেদের ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৩ রানের বেশি করতে পারেনি।