• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক আরও বাড়াতে চায় বাংলাদেশ

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২২  

সাধারণভাবে দ্বিমুখী সংকটে আছে বাংলাদেশ। একদিকে জ্বালানিপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে আমদানি ব্যয় বেশি হচ্ছে। অপরদিকে বাড়তি ডলার জোগান দিতে রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে। দুই ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরব সহায়তা করতে পারে বাংলাদেশকে। সেজন্য ওই দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক যোগাযোগ আরও  বাড়াতে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মেদ বিন সালমানকে বাংলাদেশ সফরের জন্য ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্র অনেক বেশি বিস্তৃত এবং গভীর। এরমধ্যে অভিবাসন, জ্বালানি সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বাণিজ্য, নিরাপত্তাসহ আরও অনেক বিষয় রয়েছে।

চলমান বৈশ্বিক সংকটের সময়ে বড় অর্থনীতির দেশ সৌদি আরবের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ বলে তিনি জানান।

এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আরও  অনেক দেশের মতো ২০৩০ সালে বৈশ্বিক এক্সপো আয়োজন করতে চায় সৌদি আরব এবং এর আসন্ন নির্বাচনে ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে দেশটিকে সমর্থন দিয়েছে বাংলাদেশ, যা ইতিবাচকভাবে নিয়েছে রিয়াদ।’

অভিবাসন

সৌদি আরবে ২০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি বাস করে। দেশটি থেকে প্রতি বছর কয়েকশ’ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা, যা বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় মেটাতে বড় ধরনের সহয়তা করে।

এ বিষয়ে সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সৌদি আরব প্রতিদিন কয়েক হাজার বাংলাদেশিকে শ্রমিক ভিসা দিচ্ছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের অন্য কোনও দেশ দিচ্ছে না। এছাড়া করোনাকালে টিকাসহ চিকিৎসা সেবা পেতে কোনও সমস্যা হয়নি বাংলাদেশিদের।’

তিনি বলেন, ‘দক্ষ শ্রমিকের প্রচুর চাহিদা আছে সৌদি আরবে। বর্তমানে স্বাস্থ্যকর্মী, বিশেষ করে নার্স নিতে আগ্রহী দেশটি। বাংলাদেশেরও এখন সক্ষমতা আছে নার্স পাঠানোর।’

জ্বালানি

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তেল উৎপাদনকারী দেশ হচ্ছে সৌদি আরব। বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় জ্বালানির বেশিরভাগ আমদানি করা হয় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশ বিভিন্ন উৎস থেকে তেল বা গ্যাস আমদানি করে থাকে। বর্তমানে একটি সংকটময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ সময়ে সৌদি আরবের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা সম্ভব হলে লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ।’

নিরাপত্তা সহযোগিতা

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে সৌদি আরব। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা আরও বাড়াতে আগ্রহ আছে দেশটির।

এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ বা উগ্রবাদের মতো বড় চ্যালেঞ্জ এককভাবে কোনও দেশের পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এজন্য দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা ব্যবস্থা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতায় উভয় দেশই লাভবান হয়ে থাকে। সৌদি আরবে যদি কোনও বাংলাদেশি উগ্রবাদে জড়িয়ে পড়ে এবং সেটিকে চিহ্নিত করা গেলে, অভ্যন্তরীণভাবে বাংলাদেশ সতর্ক অবস্থান নেয়।’

বাণিজ্য

সৌদি আরবে বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য বেশ কিছু পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশ চায় বাংলাদেশ। এটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনাও চলছে।

এ বিষয়ে সরকারের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘শুধুমাত্র ২০ লাখ বাংলাদেশির বাজার হিসেবে বিবেচনা করলে সৌদি আরবে যথেষ্ট বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ১৩৭টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের বিষয়ে আলোচনা করছি।’ এছাড়া সোদি আরবে মাছ, ওষুধ, ইলেট্রোনিক্স, হালাল মাংস, চামড়াজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, সিরামিকসহ অন্যান্য পণ্য রফতানি করার সুযোগ আছে বলে তিনি জানান।