• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ

টেকসই উন্নয়নের জন্য কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৯ নভেম্বর ২০২২  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের ওপর দেশ ও জাতি ভরসা করে। টেকসই উন্নয়নের জন্য আমাদের অবশ্যই কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তা মনে করেন। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য যা যা করা দরকার সব করছি। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি ভবনের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইডিইবি)। এদিন সকাল থেকেই আইডিইবি ভবনে জড়ো হতে থাকেন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা। শান্তির প্রতীক কবুতর অবমুক্ত ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এরপর পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ শেষে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবার ও চার নেতার আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

হলরুমে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রধান অতিথি হিসেবে গণপ্রকৌশল দিবস ও দেশের বৃহত্তর পেশাজীবী সংগঠনের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠান শেষে শত শত প্রকৌশলীর অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র‌্যালি মৎস্য ভবন ও সার্ক ফোয়ারা সড়ক ঘুরে কাকরাইল মোড় প্রদক্ষিণ করে। এই আয়োজনের প্রতিপাদ্য ছিল টেকসই উন্নয়নে নবায়নযোগ্য জ্বালানি।

অনুষ্ঠানে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর আস্থা প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার সামনে যারা বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বসে আছেন, তারা তাদের মেধা দিয়ে, শ্রম দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। তখনই আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সেই বার্তাকেই আমাদের সবসময় জানান দিয়ে যাচ্ছে, এবং আমাদের সহযোগিতা করে আসছে।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী ২০০৮ সালে বলেছিলেন বাংলাদেশকে তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবেন। অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। যাদের জ্ঞানের পরিধি সীমাবদ্ধ ছিল, যাদের ভবিষ্যৎ দূরদর্শী চিন্তা ছিল না, তারা বিদ্রƒপ করেছেন। আজকে আমরা সেই জায়গায় এসেছি, আমরা যদি ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন না দেখতাম, তাহলে আমরা আগের অন্ধকার জগতেই পড়ে থাকতাম।
চতুর্থ বিপ্লব শুরু হয়েছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, এটি আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে, তা আমরা অনুমান করতে পারছি না। আমাদেরকে প্রযুক্তিগতভাবে শক্তিশালী হতে হবে। আমরা সেক্ষেত্রে আপনাদের ওপর আস্থা রাখি। আমাদের অনেক সমস্যা আসবে, আমরা সেগুলো সমাধান করব। আমাদের লক্ষ্য, আমরা যে কোনো মূল্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করব। এখন থেকে ১৫ বছর আগের কথা চিন্তা করেন, কোথায় ছিলাম আমরা? আজকে কোথায় আছি? এ সবকিছুই সম্ভব হয়েছে তাঁর কারণে যার ধমনীতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে।

তাঁর নেতৃত্ব, তাঁর দূরদর্শিতার কারণেই এইসব আমরা পেয়েছি। তিনি বলেন, আমি আপনাদের শুধু এইটুকুই বলব, আপনারাই সেই কান্ডারি, আপনারাই সেই দক্ষ শক্তি, যার ওপর আমরা ভরসা করি। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কারিগরি শিক্ষার যে কোনো বিকল্প নেই, সেটি আমরা জানি, আপনাদেরও সেটা বুঝতে হবে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে আমরা সবসময় জোর দিয়েছি। আমরা কোয়ালিটি এডুকেশনের কথা বলি, যার মধ্য দিয়ে আমরা দক্ষ ও পেশাদার জনশক্তি তৈরি করছি।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে টেকসই উন্নয়নের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমরা তীব্রভাবে হোঁচট খেয়েছি। আমাদের ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরি করার সক্ষমতা আছে। আমাদের ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ হলেই চলে। তারপরেও আমরা হোঁচট খাচ্ছি। আমরা লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছি। আমরা হিসাব করে বাতি জ্বালাচ্ছি। সবাই মিলে চেষ্টা করছি।

আমাদের সবচেয়ে বড় জ্বালানি ডিজেলের ক্ষেত্রে সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন এর দাম ওঠানামা করে। এবারের এই প্রতিপাদ্য তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে যথার্থ হয়েছে। আমরা একটু চেষ্টা করলেই জ্বালানি সংকট মোকাবিলা করতে পারি। বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট, সোলার সিস্টেম এইসবের ব্যবহার করে আমরা জ্বালানি অপচয় রোধ করতে পারি। সেক্ষেত্রে আপনারাই আমাদের পথ দেখাবেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইডিইবির কেন্দ্রীয়  সভাপতি এ কে এম হামিদ। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৫ লাখ ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ও সাড়ে চার লাখ ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী আছে। প্রযুক্তিমনস্ক জাতি গঠন করার লক্ষ্যে আমরা সরকারের কাছে অনেক সুপারিশ করেছি। যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সব সময় গ্রহণ করেছেন। আইডিইবির কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, আজ চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সারা পৃথিবীতে যাত্রা শুরু করেছে। বাংলাদেশও এই পথে এগিয়ে চলেছে। যা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ করার কারণে। এ বিষয়ে সকলকে দক্ষতা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, ২০৪১ সালে উন্নত বিশ্বে উন্নীত হবে বাংলাদেশ। এরজন্য আমাদের ইনকাম যেমন বাড়াতে হবে, এর সঙ্গে বাড়াতে হবে কর্মদক্ষতা।

নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংগ্রহের উদ্যোগ এখনই নিতে হবে। এজন্য তিনটি প্রস্তাব আমরা সরকারকে দিয়েছি। আমাদের সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রেললাইনের উপর সোলার লাগানো হলে হাজার হাজার নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। এ বিষয়ে দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
স্বাগত বক্তব্যে আইডিইবির সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান বলেন, আজ (মঙ্গলবার) আমরা ৫২ বছর পার করে ৫৩ বছরে পদার্পণ করলাম। শুধু রাজধানীতে নয় সারাদেশেই এই আয়োজন করা হচ্ছে।