• বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩১

  • || ০৭ জ্বিলকদ ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ

র‌্যাব-ডিবির ভুয়া জ্যাকেট পরে মহাসড়কে ডাকাতি, কাউসার বাহিনী গ্রেফতার

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২২  

তিন-চার বছর ধরে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, মাওয়া মহাসড়কসহ বিভিন্ন মহাসড়কে র‌্যাব-ডিবির ভুয়া জ্যাকেট পরে বাসের গতিরোধ করে ডাকাতি করতো কাউসার বাহিনী। যাত্রীবাহী বাস ছাড়াও গরু ও মালবাহী ট্রাক এবং বিভিন্ন মালামালের গুদামেও ডাকাতি করতো তারা। বাহিনীর চারজনকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

গ্রেফতাররা হলেন- ডাকাত দলের সর্দার মো. কাওসার আলী (৩০), সহযোগী মো. আব্দুল্লাহ আল-মামুন (৪০), মো. আলী আকবর (২৪) ও মো. ইমামুল হক (২৭)।

বুধবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর টিকাটুলিতে র‌্যাব-৩ এর কার্যালয়ে সম্মেলনে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার জাঙ্গাল গ্রামের সুন্দরবন ফিলিং স্টেশনের পাশ থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ডিবি দুটি ভুয়া জ্যাকেট, একটি র‌্যাবের জ্যাকেট, দুটি ওয়াকিটকি সেট, একটি হ্যান্ডকাপ, পুলিশের একটি ভুয়া আইডি কার্ড, একটি এনআইডি কার্ড, দুটি মানিব্যাগ, একটি লেজার লাইট, একটি ব্যাগ, ছয়টি মোবাইলফোন এবং নগদ ৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ডাকাত সর্দার কাওসার নিজেকে ডিবি পুলিশের এএসপি, মামুন ডিবি পুলিশের ওসি, আলী আকবর র‌্যাবের এসআই এবং এনামুল ডিবি পুলিশের কনস্টেবল পরিচয় দিয়ে ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় রাতের আঁধারে ঘুরে বেড়ান। জনশূন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সুযোগ বুঝে ডিবি ও র‌্যাবের ভুয়া জ্যাকেট পরে লেজার লাইটের মাধ্যমে যাত্রীবাহী বাসের গতিরোধ করতেন তারা। পরে ডিবি ও র‌্যাব পরিচয় দিয়ে টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল এবং অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুটপাট করতেন।

চক্রটি তিন-চার বছর ধরে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি-সড়কে ডাকাতি, গরু ও মালবাহী ট্রাক এবং বিভিন্ন মালামালের গুদামে ডাকাতি করে আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের মূল টার্গেট রাজধানীর নিউমার্কেট এবং পল্টন এলাকার ব্যাংকের গ্রাহক। যখন কোনো এলাকায় ডাকাতির পরিকল্পনা করেন, তখন কাওসার সবাইকে নিয়ে বস্তিতে তাদের ভাড়া করা বাসায় সমবেত হয়ে ডাকাতির স্থান রেকি করেন। যখন কোনো ব্যাংকের গ্রাহক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বের হন, তখন ডাকাত দলের গোয়েন্দা সদস্য তাকে অনুসরণ করেন এবং সুযোগ বুঝে টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করেন। এ পর্যন্ত চক্রটি ঢাকা-কুমিল্লা মহাসড়ক এবং মাওয়া হাইওয়েতে ১৫-২০টির বেশি ডাকাতি করেছে।

তিনি বলেন, ডাকাতির দিন দু-তিনটি ব্যাংকের ওপর তাদের গোয়েন্দা নজরদারি চলমান রাখে। কোনো গ্রাহক বেশি অংকের টাকা উত্তোলন করে অন্যত্র গমন করলে তাদের গোয়েন্দা সদস্য ওই ব্যক্তির পিছু নেন। গ্রাহক যখন টাকা নিয়ে যাত্রীবাহী বাসে ওঠেন, তখন তার সঙ্গে ডাকাত চক্রের গোয়েন্দা সদস্য একই বাসে ওঠেন। তারপর ডাকাত দলের গোয়েন্দা সদস্য অন্যদের বিভিন্নভাবে পরিবহনের গতিপথ নিয়মিত আপডেট দিতে থাকেন। ডাকাত দলের নির্ধারিত স্থানে বাকি সদস্যরা ডিবি ও র‌্যাবের জ্যাকেট পরে লেজার লাইটের মাধ্যমে বাসের গতিরোধ করে এবং বাসে থাকা টার্গেট ব্যক্তিকে মাদককারবারি বা হত্যা মামলার আসামি সাজিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে তাদের মাইক্রোতে তুলে নেন। পরে তার কাছ থেকে টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে ভিকটিমকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পালিয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, ডাকাত সর্দার কাওসারের নামে বিভিন্ন থানায় তিনটি ডাকাতি ও ডাকাতির প্রস্তুতি মামলা রয়েছে। কাওসার বিভিন্ন সময় বগুড়া থেকে ঢাকায় এসে তার সহযোগীদের সমবেত করে ডাকাতি করেন। চক্রটি ডাকাতির সুবিধার্থে যাত্রাবাড়ী এলাকার বস্তিতে ঘরভাড়া নিয়ে সেখান থেকে ডাকাতির পরিকল্পনা এবং কার্যক্রম করে। কাওসার ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরি মামলায় ২০২০ থেকে ২০২২ সালে সাত মাস জেল খেটে জামিনে বের হন। জামিনে বের হয়ে আবারও ডাকাতি শুরু করেন।

এছাড়া কাওসারের প্রধান সহযোগী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।