• বুধবার ১৫ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১

  • || ০৬ জ্বিলকদ ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার যত ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে, কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর জলাধার ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণে প্রকৌশলীদের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী

আইএমএফের ঋণ পেতে পারে বাংলাদেশ

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৯ নভেম্বর ২০২২  

করোনাভাইরাসের প্রভাব ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় চাপ তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে বেশিরভাগ দেশ নিজেদের মতো করে বিভিন্ন নীতি হাতে নিয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় অর্থনীতির চাপ সামলাতে বাংলাদেশও ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে যে ঋণ চেয়েছে, তার ওপর গত দু'সপ্তাহ ধরে ঢাকায় আলোচনা এক প্রকার শেষ করেছে সংস্থাটির একটি মিশন। সরকারের সঙ্গে আলোচনাকে ইতিবাচক আখ্যা দিয়ে তাদের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সমাপনী বৈঠকে। আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা শেষ করে বিবৃতি দেবে আইএমএফ মিশন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আলোচনার অগ্রগতি বিবেচনায় তাঁরা মনে করছেন, আইএমএফের ঋণ পেতে পারে বাংলাদেশ। আইএমএফ মিশনের অবস্থান ইতিবাচক। তবে চূড়ান্তভাবে ঋণ নেওয়া বা দেওয়া নির্ভর করবে সংস্থার বিভিন্ন শর্তের বিষয়ে সরকারের সম্মতির ওপর।

গত জুলাইয়ে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেয় সরকার। এর পর নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন তথ্য যাচাইয়ের জন্য দুই সপ্তাহের সফরে ঢাকায় আসে আইএমএফ মিশন। গত ২৬ অক্টোবর থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পরিসংখ্যান ব্যুরো, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছে তারা।

জানা গেছে, বাংলাদেশের বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতিকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে না আইএমএফ। তবে যেভাবে কমছে তা অব্যাহত থাকলে উদ্বেগজনক পর্যায়ে যেতে পারে। এ বাস্তবতায় রিজার্ভ সুরক্ষায় সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। আইএমএফের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর শেষে প্রধান কার্যালয়ে একটি রিপোর্ট দেবে। এর পরই মূলত কী কী শর্ত থাকবে চূড়ান্তভাবে তা জানা যাবে। দু'পক্ষের সম্মতির পর ঋণ প্রস্তাব উঠবে আইএমএফ পরিচালনা পর্ষদে।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চূড়ান্ত বৈঠক করে সফররত টিম। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন। গতকাল নতুন করে কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়নি। গত দু'সপ্তাহে কয়েক দফা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছে মিশন। এসব বৈঠকে ডলারের দর নির্ধারণ, সুদহারের বিদ্যমান সীমা এবং আর্থিক খাতে বিভিন্ন সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ব্যালেন্স অব পেমেন্টের হিসাবায়ন পদ্ধতি, রাজস্ব, মুদ্রানীতির মধ্যে সমন্বয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ডলারের দর বৃদ্ধির এ সময়ে অসম প্রতিযোগিতা চলছিল। যে কারণে ব্যাংকগুলো নিজেরাই বাজারভিত্তিক একটি দর ঠিক করেছে। চলতি বছরের শুরুতেও আমদানিতে ৮৬ টাকার নিচে থাকা ডলার এখন ১০৬ টাকা। রেমিট্যান্সে ৮৫ টাকার নিচে থাকা ডলারের দর পাচ্ছে ১০৭ টাকা। বর্তমান বাস্তবতায় বাংলাদেশের এ অবস্থানকে আইএমএফ মিশন যৌক্তিক মনে করে। সুদহারের সীমার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ে এমনিতেই চাপে রয়েছে বাংলাদেশ। একবারে সীমা তুলে দিলে সুদহার অনেক বাড়বে। তাতে মূল্যস্ম্ফীতি আরও বেড়ে দরিদ্র শ্রেণি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিদ্যমান সীমা তুলে দিলে ব্যাংকের আয় বাড়বে। যার বড় সুবিধাভোগী হবে ব্যাংকের মালিকপক্ষ।

যে কারণে এখনই সীমা পুরোপুরি তুলতে চায় না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে সীমা বাড়ানো বা আংশিক প্রত্যাহারের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।

আর্থিক খাতের সংস্কার বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। দেশের মন্দ ঋণের বড় অংশই যে ১০টি ব্যাংকে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের আলাদাভাবে তদারকির উদ্যোগ নিয়েছে। এ ছাড়া খেলাপি ঋণ কম দেখানোর ক্ষেত্রে যেসব ছাড় দেওয়া হয়েছে, তা ছিল করোনার কারণে সাময়িক ব্যবস্থা। ঋণখেলাপিদের বিষয়ে কঠোর নীতি নেওয়াসহ ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। রাজস্ব আইন সংশোধনেও বিভিন্ন প্রক্রিয়া চলমান আছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে কর ছাড় আছে, ধীরে ধীরে তা কমানো হবে।

আমদানিতে খরচ অনেক বাড়লেও রপ্তানি এবং রেমিট্যান্স সে হারে বাড়ছে না। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স কমেছে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যাপক চাপে পড়েছে। গত আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর পেরোনো রিজার্ভ কমে গতকাল ৩৪ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আর আইএমএফের মানদণ্ডের আলোকে হিসাব করলে নিট রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৫ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ শিগগিরই গ্রস রিজার্ভের পাশাপাশি নিট রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ করবে।