• মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

  • || ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক সকল ক্ষেত্রে সঠিক পরিমাপ নিশ্চিত করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিতে কাজ করছে বিএসটিআই: প্রধানমন্ত্রী চাকরির পেছনে না ছুটে যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান ‘সামান্য কেমিক্যালের পয়সা বাঁচাতে দেশের সর্বনাশ করবেন না’ যত ষড়যন্ত্র হোক, আ.লীগ সংবিধানের বাইরে যাবে না: ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী

পোস্ত খাওয়ার উপকারিতা

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০১৮  

পোস্ত খুবই সুস্বাদু একটি খাবার। আলু পোস্ত খাওয়া যায় বা পোস্ত বেটে খাওয়া যায়। পোস্তের বড়া খেতেও খুবই সুস্বাদু। কিন্তু এই পোস্ত আমরা কেন খাব। এই পোস্ত খেলে কী কী উপকার হয়? সে সম্পর্কে জেনে নিন-

পোস্ততে কী কী পুষ্টি গুণ রয়েছে?:

পোস্ততে নানা রকম ভিটামিন ও মিনারেলস রয়েছে। যেটা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। শুধু তাই নয়। একাধিক রোগের হাত থেকেও বাঁচাতে পারে এই পোস্ত।

পোস্ত কোন কোন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে:

ব্রেইন পাওয়ার বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে পোস্ত। ব্রেইনকে শক্তিশালী করতে ক্যালসিয়াল, কার্বন ও কপার এই তিনটি উপাদানই প্রচুর পরিমাণে রয়েছে পোস্ততে। তাই ব্রেইনের শক্তি ক্ষমতাকে বাড়াতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে পোস্ত খেতে হবে। মস্তিষ্কের যে কোনো রোগ প্রতিরোধ করার জন্য পোস্ত খাওয়া খুবই প্রয়োজন। এছাড়া পুষ্টি ঘাটতি থাকলেও পোস্ত খাওয়া খুবই জরুরী।

পোস্তের ভিতরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বো হাইড্রেড। যেটা শরীরের শক্তি ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি এনার্জির ঘাটতিও পূরণ করতে সাহায্য করে থাকে। শরীরের সচলতা বৃদ্ধি করার জন্য সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন অন্তত পোস্ত খেতেই হবে। এছাড়া শরীরের পুষ্টির ঘাটতি দূর করে থাকে পোস্ত।

পুষ্টির ঘাটতি দূর করার জন্য আমাদের প্রয়োজন হয় ক্যালসিয়াম, আয়রণ, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও থিয়ামিন বি ৬, এসবগুলো উপাদান পোস্তে রয়েছে। তবে পোস্তের বড়া বা আলু পোস্ত যেটিই খান না কেন তা পুষ্টির ঘাটতি অনেকটাই দূর করতে সাহায্য করবে। এতে শরীরের সচলতা অনেকাংশেই বৃদ্ধি পাবে। তেমনই এতে যে কোনো রোগের আশঙ্কা দূরে চলে যায়।

হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে পোস্ত। তার কারণ হচ্ছে পোস্তে প্রচুর পরিমাণে ফাইভার থাকে যা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই আপনি যদি পোস্ত খান তবে পেট ঠান্ডা থাকবে আর হজম ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পাবে। আর একটি বিষয়ে পোস্ত খুবই উপকারী তা হলো পোস্ত আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টরেলের মাত্রা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। ফলে স্বাভাবিকভাবে হার্টের কোনো রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। তাই যদি হার্টের সমস্যা থাকে তবে পোস্ত অবশ্যই খেতে হবে।

শুধু তাই নয় পেটের যে কোনো রোগের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে এই পোস্ত। আপনার যদি পাকস্থলিতে ব্যাথা হয় তবে পোস্ত গুঁড়ো আর পরিমাণ মতো ঘি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। সেই পেস্ট পেটের ওপরে লাগিয়ে কিছু সময় রেখে দিতে হবে। এতে কষ্ট অনেকটাই কমে যাবে। তার কারণ হচ্ছে পোস্তের মধ্যে পেভাবেরিন নামক এক ধরণের উপাদান যা পেটের পেশির কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর মধ্য দিয়ে এবডোমিনাল ব্যাথা কমাতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। এমন কি যদি ইনশোমেনিয়ার প্রকোপ থাকে সেটাই কমিয়ে দিতে সাহায্য করে এই পোস্ত।

যদি রাতে ঠিক মতো ঘুম না হয় বা অনিদ্রা জনিত রোগ থাকে তাহলে প্রতিদিন চা বানিয়ে খেতে হবে আর তার মধ্যে একটু পোস্ত দিয়ে দিতে হবে। সেই চা খেয়ে নিলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তার কারণ অনেক গবেষনায় দেখা গেছে, এই পানীয়টি নার্ভকে শান্ত করার পাশাপাশি যদি অনিদ্রার সমস্যাকে দূর করে দেয়। সেই সঙ্গে পোস্তের ভেতরে রয়েছে নানা রকম উপাদান। যা মানুষিক অবসাদ বা স্ট্রেস কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।

গলা ব্যাথা বা ঠান্ডা লাগা সর্দি কাশি কমিয়ে দেয় পোস্ত। আপনার যদি গলা ব্যাথা হয় ঠান্ডা লাগার পাশাপাশি তবে এক চামচ নারকেলের দুধের সঙ্গে এক চামচ পোস্ত ও মধু মিশিয়ে ভালো করে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। তা মাঝে মাঝে খেতে হবে। কয়েকদিন এভাবে খেতে থাকলেই দেখা যাবে যে, গলা ব্যাথা অনেকটাই কমে গেছে। আর এতে সর্দি কাশিও অনেকটাই কমে যাবে। তার কারণ হচ্ছে পোস্তের মধ্যে নসেপাইন ও কোডেইন নামক দুটো উপাদান রয়েছে যা গলার ব্যাথা ও সর্দি কাশি কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

আমাদের দেশে গরমের সময়টাই বেশি থাকে। প্রচন্ড গরমে আমাদের কষ্ট পেতে হয়। সান স্ট্রোন হয় ও নানা রকম সমস্যাও হয়ে থাকে। এই গরমের হাত থেকে রক্ষা করে শরীরকে তাপমাত্রার হাত থেকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে থাকে এই পোস্ত। আপনি পানীয় তৈরি করে নিতে পারেন পোস্তর সঙ্গে। যেমণ: একটু খানি বাদাম , গোল মরিচ ও ঠান্ডা দুধ মিশিয়ে একটি পানীয় তৈরি করে খেতে পারেন। মাঝে মাঝে বা প্রত্যেক দিন ৩ থেকে ৪ বার করে খেলে তাপ প্রবাহ অনেকটা কমে যাবে। সেই সঙ্গে সান স্ট্রোনের কোন রকম সম্ভাবনাই থাকবে না। এটা আয়ুবেদীয় শাস্ত্র মতে জানা গেছে।

এছাড়াও ত্বকেও সুন্দর রাখে এই পোস্ত। পরিমাণ মতো পোস্তের সঙ্গে পানি মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। তারপর সেই পেস্ট মুখে লাগিয়ে কিছু সময় রেখে ভালো করে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। নিয়মিত এটা ব্যবহার করতে পারলে ত্বকের আদ্রতা ফিরে আসবে। সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্যও অনেক বৃদ্ধি পাবে। পোস্তের ভিতরে থাকা উপকারী ফ্যাটি এসিড এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

পোস্ত শুধু শরীরকে ঠান্ডা করে এটাই সবার জানা ছিল। তবে আজকে পোস্তের এত সব গুণের কথা জেনে মাঝে মাঝে পোস্ত খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। আলু পোস্ত, পোস্তে বড়া কিংবা পোস্তের বাটার করেও খেতে পারেন।