• রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

ক্ষুধার্ত মায়ের দুধ না পেয়ে অনাহারে গাজার শিশুরা

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪  

দখলদার ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা ও অবরোধের কারণে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার অপুষ্টিতে ভোগা মায়েরা যেসব শিশুদের জন্ম দিচ্ছেন তারা অসুস্থ হয়েই জন্মাচ্ছে, ক্ষুধার্ত মায়েদের বুকে দুধ তৈরি হচ্ছে না আর তাতে নবজাতকরা ওজন হারাচ্ছে; জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদককে রাফা হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে শিশুরোগের চিকিৎসক জাবর আল-শায়ের এক নবজাতককে দেখান, জন্মের পর যার ওজন ছিল সাড়ে সাত কেজি, মাত্র দেড় মাসের মধ্যে শিশুটি ২ কেজি ওজন হারিয়ে এখন সাড়ে পাঁচ কেজি হয়েছে।তিনি বলেন, এইটা খারাপ। এটা তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সব সময় ওর বুকে জ্বালা হচ্ছে আর পেট ব্যথা করছে।
শিশুটির মা শরুক শাবান তার সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান কিন্তু তিনি নিজেই খেতে পান না। দক্ষিণ গাজার অধিকাংশ মানুষের মতো তিনিও অল্প একটু রুটি ও টিনজাত খাবারের ওপর বেঁচে আছেন।

চিকিৎসকরা আরো জানিয়েছেন, আহত রোগীরা ক্ষুধার কারণে দুর্বল হয়ে পড়ায় সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধও গড়ে তুলতে পারছেন না।

রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় গাজার উত্তরাঞ্চল প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। কারও পক্ষে এখানে যাওয়াও অত্যন্ত কঠিন। এখানে ত্রাণ সহায়তাও বিরল। কখনও ত্রাণ পৌঁছলে ক্ষুধার্ত ও বেপরোয়া ফিলিস্তিনিরা সেগুলো ঘিরে ধরে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।  

ত্রাণ কর্মীরা জানিয়েছেন, এখানে তারা ক্ষীণ হয়ে যাওয়া লোকজনকে দেখেছেন, চোখমুখ শুকিয়ে যাওয়া এসব লোকদের দেখেই বোঝা যায় এরা ক্ষুধার্ত।

ছোট্ট ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজার সব জায়গায় ক্ষুধা ছড়িয়ে পড়েছে। এর ২৩ লাখ বাসিন্দার সবাই ক্ষুধার্ত। তারা গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের অবিরাম বোমা হামলার মধ্যে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে। চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ভূখণ্ডটির অনেক এলাকা ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন।

গাজার মিশরীয় সীমান্তের নিকটবর্তী এলাকাগুলো আমদানী করা খাবারের সীমিত সরবরাহ পেলেও ভূখণ্ডটির উত্তর ও মধ্যাঞ্চল দুর্ভিক্ষের মুখে আছে বলে আন্তর্জাতিক ত্রাণ কর্মীরা জানিয়েছেন। এই দুটি এলাকায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই চলছে।

গাজায় বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সমন্বয়ক শন কেইসি বলেন, উত্তরাঞ্চলের খাদ্য পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। সেখানে প্রায় কোনো খাবার নেই আর যাদের সঙ্গেই আমরা কথা বলি সবাই খাবার ভিক্ষা চায়।

গাজার অনাহারে থাকা মানুষদের বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই। ত্রাণ সংস্থাগুলো তীব্র লড়াইয়ের মধ্যেই সেখানে যাওয়ার ও লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে যাচ্ছে। শিশুরা কতোটা অপুষ্টিতে ভূগছে মূল্যায়ন করার জন্য তারা কতোট মাংস হারিয়েছে হাতের বের মেপে তা বের করার পরিকল্পনা করেছে ত্রাণ সংস্থাগুলো।