• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

আমবাগান থেকে পাখির বাসা ভাঙার ওপর নিষেধাজ্ঞা

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০১৯  

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে থাকা ‘শামুকখোল’ নামের কয়েক হাজার পাখির বাসা ভাঙার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, কখনোই ওখান থেকে পাখির বাসা ভাঙা যাবে না। একইসঙ্গে ওই গ্রামকে কেন পাখির জন্য অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। 

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। ‘পাখিদের বাসা ছাড়তে সময় দেওয়া হলো ১৫ দিন’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে আজ প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রজ্ঞা পারমিতা রায়। এসময় রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল সামীউল আলম সরকার।

এদিকে ওই গ্রামকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করলে আমবাগান মালিক বা ইজারাদার কি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তা নিরুপন করে ৪০ দিনের মধ্যে আদালতকে জানাতে রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পরিবেশ সচিব, রাজশাহী ডিসি ও বাঘা উপজেলার ইউএনও-কে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামে ২৫টি আমগাছে শামুকখোল পাখিরা বাসা বেঁধে বাচ্চা ফুটিয়েছে। বাচ্চাগুলো এখনও উড়তে পারে না। গত চারবছর ধরেই পাখিগুলো সেখানে বাসা বাঁধছে। প্রতিবছর বর্ষার শেষে ওই আমগাছগুলোদেত বাসা বেধে ডিম পাড়ে এবং বাচ্চা ফোটায়। শীতের শুরুতে পাখিগুলো চলে যায়। এ কারণে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পক্ষ থেকে পাখি নিধন ঠেকাতে বাগানের পাশে সাইনবোর্ড লাগানো হয়। সাইনবোর্ডে লেখা আছে, বন্যপ্রাণী আটক, হত্যা, শিকার, পরিবহন ও কেনাবেচা দণ্ডনীয় অপরাধ। যার শাস্তি সর্বোচ্চ ১২ বছর ও ১৫ লাখ টাকা জরিমানা। ওই সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। 

জানা যায়, প্রতিবছর পাখি বাসা বাধার কারণে আমবাগানের মালিক ও ইজারাদার ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। গতবছর একই কারণে আমগাছের পরিচর্যা করতে পারেননি ইজারাদার। ফলে কাঙ্খিত পরিমাণ আম না পেয়ে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হন। একারণে এবছর আগেভাগেই গাছ থেকে পাখির বাসা সরিয়ে গাছের পরিচর্যা করার উদ্যোগ নেন বাগানের ইজারাদার আম ব্যবসায়ী আতাউর রহমান। পাখির বাসা ভেঙ্গে গাছে ‌ওষুধ ছিটাতে চান। কিন্তু বাসায় বাসায় অসংখ্য বাচ্চা থাকায় স্থানীয় কয়েকজন পাখিপ্রেমিক এতে বাধা দিয়েছেন। এ অবস্থায় বাগান মালিক ২৯ অক্টোবর পাখিগুলোর সরে যাবার জন্য ১৫ দিন সময় বেধে দিয়েছেন। ১৫ দিন পর তিনি বাসা ভেঙ্গে দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এ অবস্থায় এ নিয়ে গতকাল একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন এক আইনজীবী। আদালত বিষয়টি দেখে আদেশ দেন।

এদিকে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর স্থানীয় র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক মাহফুজুর রহমানসহ কর্মকর্তারা আমবাগানের মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বাসার কারণে কি পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। র‌্যাবের পক্ষ থেকে আমবাগান মালিক ও ইজারাদারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সেখানে র‌্যাবের পাহারা বসানো হয়েছে। পাখি যাতে তাড়াতে না পারে সেজন্যই র‌্যাবের এই উদ্যোগ বলে জানা গেছে।