• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

‘খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা বাড়াতে হবে’

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর ২০২০  

খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা ও শস্যের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেছেন, দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার জন্য মাটির গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের জীবন-জীবিকা ও খাদ্য নিরাপত্তা নির্ভর করে টেকসই মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনার ওপর। বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষে শনিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত সেমিনার, শোকেসিং এবং সয়েল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে ১৭ কোটি মানুষ রয়েছে যা ক্রমশ বাড়ছে। প্রতিবছর ২২ লাখ নতুন মুখ যুক্ত হচ্ছে। অন্যদিকে শিল্পায়ন, নগরায়ন, বাড়ি-ঘর নির্মাণ, রাস্তাঘাট তৈরিসহ নানা কারণে চাষের জমি কমছে। এই দুই চ্যালেঞ্জের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন। এসব বিবেচনায় নিয়ে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা ও শস্যের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। সেজন্য মাটিকে সজীব রাখতে হবে, মাটির গুণাগুণ বজায় রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শুধু কৃষি নয়, মাছ, প্রাণিসম্পদ ও পোল্ট্রির খাদ্যও মাটি থেকে আসে। সেজন্য মাটিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এছাড়া দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে যেয়ে শস্যের নিবিড়তা বাড়ছে কিন্তু মাটির উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে। টেকসই মাটি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মাটির উৎপাদনশীলতা, মাটিতে গাছের অপরিহার্য পুষ্টি উপাদানের মান বজায় রাখতে হবে।’

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশে মাটির গুণাগুণ ধরে রাখতে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত জমি ও পাহাড়ি এলাকার সমস্যাক্লিষ্ট জমিকে চাষের আওতায় আনার জন্য গবেষণার মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে। যার মাধ্যমে টেকসই মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনায় সংস্থাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

দেশে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস পালনের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে সহযোগিতা করেছে মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, সয়েল সাইন্স সোসাইটি অব বাংলাদেশ এবং প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশ। এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘মাটিকে সজীব রাখুন, মাটির জীববৈচিত্র্য রক্ষা করুন’।

খাদ্য ও কৃষি সংস্থা-এফএও'র হিসেবে, পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের এক চতুর্থাংশের আবাসস্থল হচ্ছে মাটি। সুস্থ মাটির একটি অপরিহার্য উপাদান হচ্ছে মাটির জীববৈচিত্র্য। এ জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করতে পারলে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে আর মাটি সুস্থ থাকলেই কেবল নিরাপদ ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাদ্য উৎপাদন সম্ভব হবে। কিন্তু বর্তমানে মাটির এ জীববৈচিত্র্য ক্ষতির সম্মুখীন যা উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর অন্যতম একটি কারণ, টেকসই মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা না থাকা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম।

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিধান কুমার ভান্ডারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, এফএও'র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি. সিম্পসন প্রমুখ।