• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

পিরোজপুরে কঁচা নদীতে খনন, নৌ চলাচলে ফিরেছে যাত্রীদের স্বস্তি

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২০ জুন ২০১৯  

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী ও ভান্ডারিয়ার মধ্যবর্তী কঁচা নদীতে দীর্ঘ দিন ধরে ডুবোচরে আটকে নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছিলো। চরখালী-টগড়া ফেরি চলাচলে ভোগান্তির কোন শেষ ছিল না। এখানে নাব্যতা সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক নৌ-পথ থেকে শুরু করে অভ্যন্তরীণ নৌ-যোগাযোগ অনেক সময় পড়েছে হুমকির মুখে।

এই রুটে বাংলাদেশ-ভারত (অভ্যন্তরীণ) এবং খুলনা ও মংলার সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের নৌ যোগাযোগ রয়েছে। ডুবোচরের কারণে এ পথে চলাচলকারী বিআইডব্লিউটিসির রকেট-স্টিমার, সরকারি ও বেসরকারি অয়েল ট্যাংকার, কোস্টার, কার্গো, নৌবাহিনীর জাহাজ ইত্যাদি চলাচলে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

সম্প্রতি এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেন সাবেক মন্ত্রী ও পিরোজপুর-২ আসনের (কাউখালী-ভান্ডারিয়া-ইন্দুরকানী) সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তিনি নিজস্ব চেষ্টায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের স্বার্থে কঁচা নদীর ডুবোচর খননের ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে বরিশাল-ঝালকাঠি-ভান্ডারিয়া-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ৫৩ কিলোমিটারে কঁচা নদীর চরখালী-টগড়া পয়েন্টের উভয় পাশে অবস্থিত ডুবোচর খননের (ড্রেজিং) কাজ বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং ডিপার্টমেন্ট থেকে সম্পন্ন করা হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিএর টেকনিক্যাল এসিস্ট্যান্ট (সিভিল) মিজানুর রহমান সোহেল জানান, 'কঁচা নদীর ৫০০ মিটার দীর্ঘ ও ২৩ মিটার চওড়া এলাকায় এই খনন কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখানে ৬৫ হাজার ঘনমিটার মাটি উত্তোলন করা হবে। প্রায় এক মাস ধরে খনন কাজ চলছে চরখালী-টগড়া ফেরি ঘাট সংলগ্ন এলাকায়।'
চরখালী-টগড়া ফেরির ইজারা আদায় কর্মী হায়দার আলী জানান, 'ডুবোচরের কারণে প্রায়ই ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়েছে এখানে। পণ্য পরিবহনেও সমস্যার শেষ ছিল না। অনেক সময় গাড়িসহ ফেরিগুলো ডুবোচরে দীর্ঘসময় ধরে আটকে থাকতো। এমনকি অ্যাম্বুলেন্সে রোগীসহ ফেরি মাঝ নদীতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডুবোচরে আটকে থাকায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। দীর্ঘ সময় নদীর উভয় প্রান্তে যানবাহনের লম্বা লাইন চোখে পড়াটাও ছিল স্বাভাবিক।'
বর্তমানে সে চিত্র আর নেই। দুরন্ত গতিতে নিয়মিত ভাবে ফেরি চলাচল করছে। নির্বিঘ্নে যাত্রী সাধারণ পৌঁছে যাচ্ছে তাদের গন্তব্যে। সবার মাঝে এখন স্বস্তির নিশ্বাস। এ বিষয়ে পিরোজপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক খোকন জানান, 'চরখালী-টগড়া ফেরিটি দক্ষিণাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। কিন্তু কঁচা নদীতে ডুবোচরের কারণে দীর্ঘ দিন ধরে বেশ কয়েকটি রুটের যানবাহন চলাচলে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বর্তমানে চরখালী-টগড়া ফেরিঘাট ব্যবহারকারী দক্ষিণাঞ্চলের বরগুনা, পাথরঘাটা, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, কাঠালিয়া, পিরোজপুর রুটের যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে আর সমস্যা হচ্ছে না।'

চরখালী-টগড়া ফেরির চালক দেলোয়ার হোসেন জানান, 'কিছু দিন আগেও ভাটির সময় ফেরি বন্ধ করে রাখতে হয়েছে। প্রায়ই ফেরি আটকে যেত মাঝ নদীতে। ডুবোচরের কারণে ফেরি চালাতেই পারতাম না। নদী খননের ফলে এখন আর সমস্যা হচ্ছে না।' কঁচা নদীতে ডুবোচর খননের ব্যবস্থা করায় এই রুট ব্যবহারকারী যাত্রী সাধারন সাবেক মন্ত্রী ও পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু'র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।