• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ

ফাহাদ হত্যার বিচার দ্রুত শেষ করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০১৯  

দ্রুত সময়ের মধ্যে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দোষী যে দলেরই হোক না কেন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’ সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে আবরারের বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে গেলে তাদের এ আশ্বাস দেন তিনি।

গণভবন সূত্র জানায়, বিকাল পাঁচটায় আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, মা রোকেয়া বেগম এবং ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ গণভবনে যান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। এসময় তাদের সান্তনা দেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তাদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন, সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’

পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

তিনি জানান, বুয়েট ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর হাতে নিহত আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার দ্রুত শেষ করতে ইতিমধ্যে আইনমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় নিহত আবরারের মা রোকেয়া খাতুন প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি মায়ের আসনে থেকে ঘটনার পর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে যে কঠোর ভূমিকা নিয়েছেন সে জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই।’

গণভবনে আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুনের সাথে সাক্ষাতের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে জড়িয়ে ধরেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শোনার সাথে সাথে সিসি টিভি ফুটেজ দেখে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। আমি দেখতে চাইনি কে কার লোক। আপরাধী কে বা কোন দল করে সেটা বিবেচনা করিনি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওই সময় কিছু শিক্ষার্থী ভিডিও ফুটেজ আটকানোর চেষ্টা করেছে। সেটা তারা কেন করেছে তা এখনো আমার বোধগম্য নয়। তা না হলে হয়তো সব অপরাধী আরও আগেই গ্রেফতার হতো।’

তিনি আবরারের মায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাকে সান্তনা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। শুধু বলবো আমাকে দেখেন। স্বজন হারানোর বেদনা আমি বুঝি। আমিও এক রাতে সব হারিয়েছিলাম। আমি তখন বিচারও পাইনি।’

আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করায় আবরারের মা রোকেয়া খাতুন ও বাবা বরকতউল্লাহ প্রশাসন ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান।

উল্লেখ্য, আবরার ফাহাদ ছিলেন বুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। গত ৭ অক্টোবর ভোরে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন, পাশাপাশি মোবাইলে তার মেসেঞ্জার ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট যাচাই-বাছাই করেন। একপর্যায়ে তাকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। পরে আবরার নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে সিঁড়িতে ফেলে রেখে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে এরই মধ্যে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগও বুয়েট শাখার ১১ নেতাকে বহিষ্কার করেছে। এ ঘটনায় আবরারের বাবা ১৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন চকবাজার থানায়।

আবরার হত্যার জের ধরে এরই মধ্যে বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত যে ১৯ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাদের সাময়িক বহিষ্কারও করতে বাধ্য হয়েছে বুয়েট প্রশাসন। আবরার হত্যার বিচারের দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীরা এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।