• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
যত ষড়যন্ত্র হোক, আ.লীগ সংবিধানের বাইরে যাবে না: ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

কে এই ‘জনতার কমিশনার’ রাজীব ?

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০১৯  

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের (মোহাম্মাদপুর) কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা তারেকুজ্জামান রাজীবকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে তাকে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছে র‌্যাব। গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

জানা যায়, মোহাম্মদপুর এলাকায় যুবলীগের রাজনীতি দিয়েই রাজীবের রাজনৈতিক জীবন শুরু। অল্পদিনেই নেতাদের সান্নিধ্যে মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ বাগিয়ে নেন তিনি। থানা আওয়ামী লীগের বীর মুক্তিযোদ্ধা নেতাকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করায় বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। পরে কেন্দ্রীয় যুবলীগের এক নেতাকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা দিয়ে উল্টো তিনিই হয়ে যান ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

যুবলীগের সাইনবোর্ড আর কাউন্সিলরের পদ ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, নিয়ন্ত্রণ করতেন রাজিব। বিগত ৪ বছরে ৮-১০টির বেশি নামিদামি ব্র্যান্ডের গাড়ি কিনেছেন তিনি। যার মধ্যে মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ, ক্রাউন প্রাডো, ল্যান্ডক্রুজার ভি-৮, বিএমডব্লিউ স্পোর্টস কার রয়েছে।

 

গুলশান ও মোহাম্মদপুরে আটটি ফ্ল্যাট রয়েছে রাজীবের। কমিশনার হওয়ার পরপরই তিনি বাহিনী দিয়ে প্রচারণায় বনে যান স্বঘোষিত ‘জনতার কমিশনার’। তবে কথিত এই ‘জনতার কমিশনার’ এর বিরুদ্ধে জনতার কাছ থেকেই মাসে কোটি টাকা চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে। বাসস্ট্যান্ড, সিএনজি স্ট্যান্ড, ফুটপাতই তার চাঁদা তোলার মূল উৎস।

মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির এক কক্ষের বাসায় ভাড়া থাকতেন তারেকুজ্জামান রাজীব। তিনি এখন থাকেন নিজের ডুপ্লেক্স বাড়িতে। মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির ১ নম্বর সড়কের ৩৩ নম্বর প্লটে রাজীবের ডুপ্লেক্স বাড়ি।

পাঁচ কাঠা জমির ওপর বাড়িটি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ছয় কোটি টাকা। অথচ তার দৃশ্যমান কোনো আয় নেই, কোনো ব্যবসা নেই। শোনা যায়, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম ও দুবাইতে তার বড় ধরনের বিনিয়োগ রয়েছে।

মাত্র ৫ বছর ব্যবধানে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছে তরুণ এই কাউন্সিলর। ২০১৫ সালের কাউন্সিলর নির্বাচনে তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। বিভিন্ন কারসাজি করে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ বজলুর রহমানকে হারান তিনি।

কাউন্সিলর হওয়ার পরই যুবলীগের এই নেতার অবস্থা বদলে যেতে থাকে খুব দ্রুত। সবসময় তার চলাচলের বহরে থাকে শতাধিক নেতাকর্মী। তিনি চড়েন নিত্যনতুন অত্যাধুনিক গাড়িতে। তার ইশারাতেই রহিম ব্যাপারী ঘাটের ৩৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগের অফিসটিও দখল করা।

অভিযোগ রয়েছে, মোহাম্মদপুরে যুবলীগ কর্মী তছির উদ্দিন হত্যা মামলার আসামিরা কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবের ঘনিষ্ঠ। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে তছিরকে খুন করা হয়।

কাউন্সিলর হওয়ার পর রাজীবের লোকজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা পাইন আহমেদকে মারধর করে। ঘটনাটি প্রধানমন্ত্রী জানার পর মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়কের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় রাজীবকে।

কিন্তু পরে আবার তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এমনকি তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদ লাভ করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না রাজীবের। কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজানকে গ্রেফতারের পর এবার গ্রেফতার হলেন তিনিও।