• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
যত ষড়যন্ত্র হোক, আ.লীগ সংবিধানের বাইরে যাবে না: ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

কুড়িগ্রামের প্রথম বালুমহাল তিস্তায়

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০২২  

তিস্তা নদীতে কুড়িগ্রাম জেলার প্রথম বালুমহাল ঘোষণা করা হয়েছে। জেলার রাজারহাট উপজেলায় ‘কালীরহাট বালুমহাল’ নামে এ বালুমহাল ঘোষণা করে সম্প্রতি গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এখনও ইজারা দেওয়া হয়নি। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর নিশাত তামান্না ও রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরে তাসনিম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীতে ১০ দশমিক ৮৫ একর এলাকাজুড়ে এ বালুমহালের বিস্তৃত। জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর স্বাক্ষরিত বালুমহাল সংক্রান্ত তথ্যে দেখা যায়, রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রামহরি ও চতুরা মৌজার ৩৯টি দাগভুক্ত এলাকার প্রায় পৌনে ১১ একর জায়গা নিয়ে এই বালুমহাল ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত বালুমহালের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কালীরহাট বালুমহাল’।

প্রসঙ্গত, এর আগে কুড়িগ্রামে কোনও বৈধ বালুমহাল ছিল না। এতে বছরজুড়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করেন ব্যবসায়ীরা। ‘রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ছত্রছায়ায়’ নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে সৃষ্ট নদী ভাঙনে প্রতিবছর শত শত পরিবার বাস্তুহারা ও ভূমিহীন হচ্ছে। যাদের বেশিরভাগই পুনর্বাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

প‌রি‌বেশ‌বিদরা বল‌ছেন, বালুমহাল ছাড়া বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ অনুযায়ী বিপণনের উদ্দেশে কোনও আবাসিক এলাকার এক কিলোমিটারের মধ্যে উন্মুক্ত স্থান বা নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। একই আইনে বালু বা মাটি উত্তোলন ও বিপণনের উদ্দেশে ড্রেজিংয়ের ফলে কোনও নদীর তীর ভাঙনের শিকার হতে পারে, এমন ক্ষেত্রেও বালু বা মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। এসব অপরাধে অনূর্ধ্ব দুই বছরের কারাদণ্ড ও সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে।

এই জেলায় প্রথমবারের মতো বালুমহাল ঘোষণাকে সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) উত্তরাঞ্চলের সমন্বয়কারী তন্ময় কুমার সান্যাল। তিনি বলেন, ‘একটি জেলার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য বালু একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। কিন্তু কুড়িগ্রামে কোনও বৈধ বালুমহাল না থাকলেও ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ জেলার নদ-নদী থেকে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে নির্বিচারে বালু উত্তোলন করা হয়। এর ফলে নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা নদীভাঙনসহ নানা প্রতিকূলতার শিকার হন। আবার সরকারও বিশাল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। এতে সরকারিভাবে বালুমহাল ঘোষণা অবশ্যই ইতিবাচক।’

বালুমহালের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতের প্রতি গুরুত্বারোপ করে এই পরিবেশকর্মী বলেন, ‘বালুমহাল ইজারা ও বালু উত্তোলনের ক্ষেত্রে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন সঠিকভাবে প্রতিপালনে নজর দিতে হবে। কেননা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইজারাদাররা নির্ধারিত সীমার বাইরে গিয়ে বালু উত্তোলন করে থাকেন। ফলে নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের বাস্তুভিটা ও আবাদি জমি নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। বালু উত্তোলনে আইনের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত না হলে বালুমহাল ঘোষণার সুফল পাওয়া যাবে না।’

‘বালু উত্তোলনের ফলে পরিবেশ ও প্রতিবেশের কোনও ক্ষতি হচ্ছে কি না তা নিয়মিত তদারকি করতে হবে’- যোগ করেন এই পরিবেশকর্মী।

জানতে চাইলে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরে তাসনিম বলেন, ‘উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে তিস্তা নদীতে বালুমহাল ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে প্রস্তাবনা পাঠানোর পর কালীরহাট বালুমহাল নামে গেজেট প্রকাশ হয়েছে। তবে এখনও বালুমহালের ইজারা হয়নি। জেলা প্রশাসন ইজারার উদ্যোগ নেবে।’

বালুমহাল ইজারার বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘অল্প কিছুদিন আগে বালুমহালের গেজেট প্রকাশ হয়েছে। ইজারা প্রদানের বিষয়ে পরবর্তী কার্যক্রমের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’