কুয়াশামাখা ভোরে খেজুর রসের ঘ্রাণ, হারাতে বসেছে ঐতিহ্য
পিরোজপুর সংবাদ
প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮
শহরের বাতাসে শীত শীত ভাব! সকালে ফোঁটা ফুলের পাতায় লেগে থাকে ছোপ ছোপ কুয়াশা। সেই সকালে তাঁত বোনা চাঁদর গায়ে জড়িয়ে একঝাক শিশু কিশোর! এলো চুলের চেহারা দেখলেই বোঝা যায়, চোখ থেকে এখনও ঘুম সরেনি।
তবে এই শীত সকালে লেপের ওমটুকু ছেড়ে তারাও বের হয় কুয়াশা মোড়া রাস্তায়। জানতে চাইলে আলতো হাসিতে উত্তর আসে, খেজুরের রস খুঁজছি খাবার জন্য!
শীত আসতেই খেজুরের রসের ঘ্রাণে ভরে ওঠে বাংলার প্রকৃতি। গ্রামে-গঞ্জে শুরু হয়েছে সেই খেজুর রস আর খেজুর গুড়সহ নানা উপাদানে তৈরি পিঠা খাওয়ার ধুম। গ্রাম থেকে আসা রাজধানী ঢাকার নাগরিক জীবনও যে আবহমান বাংলার চিরন্তন এই সংস্কৃতির ছোঁয়া নিতে উতলা। তাই তো তারাও খুঁজে ফেরে সেই খেজুর রসের ঘ্রাণ।
ক্ষেতের আইলপথে চলতে চলতে শিশিরে ভিজে যাওয়া পায়ের পাতা। সন্ধ্যে হলেই গাছে গাছে বাঁধা হচ্ছে হাঁড়ি। সকাল হতে না হতেই খেজুর রসের চেনা স্বাদে মাতোয়ারা। বাড়ির উঠোন বা ধান কেটে নেওয়া শূন্য মাঠে গোল হয়ে বসে সেই রস আস্বাদন, মাটির ছোট হাড়িতে ঠোঁট ছুইয়ে খেজুর রসের স্বাদ নেওয়া অতুলনীয়। আর সাথে যদি শুকনো পাতার তৈরি বাটিতে খই, মুড়ি আর খেজুর গুড় পাওয়া যায়, তবে তো পরিচয় মেলে বাঙালির একে অপরে মেতে ওঠার রসবোধের সাথেও।
তবে এই দৃশ্যগুলো অনেকেরই চেনা হলেও ইট-পাথরের এই নগরে সে দৃশ্যের দেখা মেলা কঠিন। আর আছে মধুর এ রস থেকে বঞ্চিত হওয়ার তিক্ততাও!
বাংলা একাডেমির ফোকলোর বিভাগের পরিচালক শাহিদা বেগম বলেন, শৈশব-কৈশোরটা যাদের গ্রামে কেটেছে, খেজুর গাছ থেকে রসের হাড়ি চুরি করে রস খাওয়া তাদের অনেকেরই একটি মূল্যবান স্মৃতি। এখন তো অনেকেই বয়সের ভারে নতজানু। অনেকেই আবার শহরে কাজের ব্যস্ততায় সঠিক সময়ে গ্রামে যেতে পারেন না। ফলে অনেকেই এ জায়গাটা থেকে বেশ ভালোভাবে বঞ্চিত হন।
‘আমাদের ছেলে-মেয়েরা আজ বিভিন্ন ধরনের কোমল পানীয়ের স্বাদ জানে, কিন্তু তারা খেজুর রসের স্বাদ জানে না। খেজুর রস আমাদের আর পাঁচটা সংস্কৃতির মতোই। আমাদের উচিত এটার প্রতি আরো যত্নবান হওয়া। আমরা অতীতমুখী নই, তবে সেখান থেকে আমাদের শিখতে হবে। আমরা কখনই ঐহিত্য বিমুখ হতে চাই না,’ বলেন তিনি।
এক দশক আগেও শীতের সকালে চোখে পড়তো রসের হাড়ি ও খেজুর গাছ কাটার সরঞ্জামসহ গাছির ব্যস্ততার দৃশ্য। সাত সকালে খেজুরের রস নিয়ে গাছিরা বাড়ি বাড়ি হাঁক ডাক দিতেন। শীতের মৌসুম শুরু হতেই বাড়ি বাড়ি চলতো খেজুরের রস কিংবা রসের পাটালি গুড় দিয়ে মজাদার পিঠাপুলির আয়োজন।
সে আয়োজন শিখিয়ে দিতো একান্নবর্তী পরিবার বা সমাজে সকলে একসঙ্গে থাকার স্বাদ ও মানবিকতাও। তবে গ্রামবাংলার এ দৃশ্য এখন আর তেমন নেই। বিভিন্ন কারণে খেজুর গাছ নিধন এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে গাছির সংখ্যা কমে যাওয়ায় এখন দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে খেজুরের রসও।
এ বিয়ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আকতারী মমতাজ বলেন, নাগরিক পরিমণ্ডলের পাশাপাশি খেজুরের রসের ঐতিহ্য এখন গ্রামেও হারাতে বসেছে। গাছিও কমে গেছে। অথচ এই রস পানকে কেন্দ্র করে শীত সকালে মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য তৈরি হয়। জেগে ওঠে মানবিকতা।
অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ বলেন, এখন আমরা শেকড় ভুলে যাচ্ছি। কিন্তু নিজেদের শেকড়ের কথা আমাদের মনে রাখতে হবে। মা, মাতৃভূমি ও সংস্কৃতি একই সঙ্গে জড়ানো। এগুলোর ভেতর দিয়েই আমরা মানুষ হয়েছি। আসুন সকলে মিলে গ্রামের জন্য মঙ্গল কামনা করি, গ্রামগুলো যেন ভালো থাকে।
এখনও গ্রামের মাঠে আর মেঠোপথের ধারে কিছু গাছ দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য এই খেজুরগাছ আজ অস্তিত্ব সঙ্কটে। যে হারে খেজুরগাছ নিধন হচ্ছে সে তুলনায় রোপণ করা হয় না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র বলছে, খেজুর গাছ কমতে থাকলেও তা এখনও পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি। সুস্বাদ ও পিঠাপুলির জন্য অতি আবশ্যক উপকরণ হওয়ায় এখনও খেজুর রসের চাহিদা রয়েছে। তবে আগের মতো রস ও গুড় পাওয়া যায় না। পেলেও আগের চেয়ে ১০ গুণ বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়।
খেজুরের রস কোথায় পাওয়া যায়? নগরে জেঁকে বসা শীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাগরিকদের যেন স্লোগান হয়ে গেছে এই প্রশ্ন। ফেলে আসা গ্রামের স্মৃতি জাগানিয়া খেজুরের রসের স্বাদ নিতে তারা যেন ব্যাকুল থাকেন সবসময়ই।
খেজুরের রস বর্তমানে ঢাকায় খুব একটা পাওয়া না গেলেও রাজধানীর পার্শবর্তী এলাকাগুলোতে পাওয়া যায় কমবেশি। এরমধ্যে গাজীপুর, সাভার বা মুন্সিগঞ্জের দিকে কিছু পাওয়া যায়।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ফেরি করে রস বিক্রি করতে দেখা যায় অনেককেই। যেমন তেজগাঁও খ্রিস্টান মিশনের সামনে, গুলশান ১ এর গুদারাঘাটে, ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরে, মতিঝিল এজিবি কলোনির বাজারে, রমনা পার্ক ও শাহবাগ চত্বর। তবে এ জায়গাগুলোতে দাম পড়বে একটু বেশি।
এছাড়া ঢাকাবাসীর জন্য খেজুরের রস পাওয়ার একমাত্র নিশ্চিত স্থান হলো তিনশ ফিট রোড খ্যাত পূর্বাচল এলাকা। তিনশ ফিট রোড ধরে এগোলে পাবেন নীলা বাজার। এই বাজারেই হাতে গোনা কয়েকজন খেজুরের রস নিয়ে বসেন।
খেজুরের রস পান করার লোভটা যদি খুবই বেশি হয় তবে ভোর বেলা গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হতে পারেন। গাজীপুর সাফারি পার্কের পাশে বাঘের বাজার এলাকায় খেজুরের রস পাওয়া যাবে। দামটা এখানে কম, প্রতি লিটার ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
এ নিয়ে গাছি হারুন মোল্লা জানান, খেজুরের গাছ কমে যাওয়ায় তাদের চাহিদাও কমে গেছে। আগে এই কাজ করে ভালোভাবেই সংসার চালতো। এমনকি আগে যে আয় রোজগার হতো তাতে সঞ্চয়ও থাকতো, যা দিয়ে বছরের আরো কয়েক মাস সংসারের খরচ চলতো। গ্রামে যে কয়েকটা খেজুর গাছ আছে তা বুড়ো হয়ে যাওয়ায় এখন আর তেমন রস পাওয়া যায় না। রস বাজারে বিক্রির মতো আগের সেই অবস্থাও নেই।
তিনি বলেন, এইতো কয়েক বছর আগে এক হাড়ি খেজুর রস বিক্রি করতাম ২০ টাকায়। দিন দিন খেজুর গাছ কমে যাচ্ছে। প্রকৃতিগত সুস্বাদু সে রসও এখন আর তেমন আগের মতো নেই। তবুও কয়েকটা গাছের পরিচর্যা করে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখন খেজুর গাছ না থাকায় ২০ টাকার রসের দাম বেড়ে হয়েছে ২০০ টাকা।
- ঝালকাঠিতে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খানের সাথে প্রার্থীদের মতবিনিময়
- বারবার পানি পিপাসা লাগা কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো?
- গাছপাকা নাকি কৃত্রিমভাবে পাকানো আম চিনবেন যেভাবে
- দই দিয়ে রাঁধুন পটলের বিশেষ পদ
- যেভাবে এয়ার কুলার ব্যবহার করলে দ্রুত ঘর ঠান্ডা হবে
- বাকশাল সদস্য হয়েছিলেন জিয়াউর রহমান: কাদের
- রাঙ্গামাটিতে সশস্ত্র হামলায় ইউপিডিএফের কর্মীসহ নিহত ২
- নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ২০৪ নেতাকে বহিষ্কার করল বিএনপি
- শিক্ষার্থীর শ্বাসনালীতে আটকে যাওয়া বাইন মাছ বের হলো অপারেশন করে
- অভিযান শুরু হলে পাহাড়ে অস্ত্র-গোলা লুকিয়ে সমতলে আসেন রহিম
- কান কর্তৃপক্ষের বিতর্কিত আচরণ, নাম নেই ঐশ্বরিয়ার!
- টেকনাফে হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট
- ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্র্যাস্ট ব্যাংকের শাখায় আগুন
- ৭২ ঘণ্টার মধ্যে লেগুনায় লুকিং গ্লাস লাগানোর কড়া নির্দেশ পুলিশের
- ধর্মান্ধরা সমাজকে পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে: ভূমিমন্ত্রী
- নিয়ন্ত্রণে এসেছে কারওয়ান বাজারের আগুন
- স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা চাইলেন
- শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ফলেই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পেয়েছে
- স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ২২বছরের স্বামীর বাড়িতে ৪৩বছর বয়সি স্ত্রী
- শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে চায়না দুয়ারী জাল ধ্বংস
- মুলাদী ও হিজলা উপজেলার ৬০ শতাংশ ভোটকেন্দ্রই অতি গুরুত্বপূর্ণ
- প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে আগৈলঝাড়ায় শোভাযাত্রা
- ভোলায় পাঙ্গাস মাছের অবৈধ পোনা শিকারের ৫টি চাই ধ্বংস
- ভোলায় শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত
- কেউ হতাশ হবেন না: প্রধানমন্ত্রী
- ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারীদের বিরুদ্ধে আসতে পারে আইনি ব্যবস্থা
- এডিপি: সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে যে ১০ প্রকল্প
- উন্নয়ন রূপকল্পের অন্যতম পথিকৃৎ শেখ হাসিনা : ধর্মমন্ত্রী
- সৌদি গেলেন ২৭ হাজার হজযাত্রী
- বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ দিয়ে উদ্বোধন হচ্ছে মডিউলার স্টেডিয়াম
- মঠবাড়িয়ায় সূর্যমুখি চাষে কৃষকদের ব্যপক সাফল্য
- মঠবাড়িয়ায় বিয়ের প্রলোভনে স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ॥ গ্রেপ্তার ধর্ষকসহ-২
- আজীবনের জন্য বয়কট ঘোষণা করা হলো জয় চৌধুরীকে
- বেশিক্ষণ রোদে থাকলে যে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে
- মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগর সরকার নিয়ে গবেষণার আহ্বান
- ম্যাঙ্গো রাইস
- আইস ফেশিয়াল করার নিয়ম
- জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সব ম্যাচ জেতা উচিত: সুজন
- গরমে মাথার তালু অতিরিক্ত ঘামছে? চুলের ক্ষতি এড়াবেন যেভাবে
- লোক দেখানো কাজ শিরকের সমান
- পুরোনো স্মার্টফোন ৬ কাজে লাগাতে পারেন
- আম মুরগির ঝোল
- মঠবাড়িয়ায় ৮‘শ ৫০ গ্রাম গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
- দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার পর মাছ শিকারে প্রস্তুত জেলেরা
- বাংলাদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ ফি কমাতে ভুটানের প্রতি অনুরোধ
- গ্যাস খাতে বড় সংস্কার করবে পেট্রোবাংলা
- পৃথিবীতে শক্তিশালী সৌরঝড়ের আঘাত, বিদ্যুৎ-যোগাযোগে বিপর্যয়ের শঙ্কা
- এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা
- হাঁপানির কারণে দাঁত-মাড়ির ক্ষয় হচ্ছে কি না বুঝবেন যে লক্ষণে
- দেশের মধ্যে ভ্রমণে আগ্রহ বাড়ছে