• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফিরে আসবোই: শেখ হাসিনা জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে

বিনয়ী হওয়ার উপকারিতা

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২২  

অহংকারহীন মানুষের সেরা গুণ বিনয়। এটি ইসলামি শরিয়তের নির্দেশ। বিনয় মুমিনদের ভালো চরিত্রের মধ্যে একটি মহান চরিত্র। আল্লাহ তাআলা তাঁর নবি হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিনয়ী হওয়া সম্পর্কে অহি নাজিল করেছেন। এটিই এ গুণটির গুরুত্ব ও আবশ্যক হওয়ার প্রমাণ বহন করে। বিনয়ী হওয়ার মর্যাদা ও উপকারিতা অনেক। এ সম্পর্কে কোরআন-সুন্নায় অনেক দিকনির্দেশনা এসেছে। কী সেইসব দিকনির্দেশনা?

যে বিনয়ী হয় সে আল্লাহর আদেশ ও নিষেধের সামনে নিজেকে একেবারে ছোট হিসেবে পূর্ণরূপে মেনে নেয়। কননা বিনয়ের অর্থ হলো- আল্লাহ তাআলার অন্য বান্দাদের তুলনায় নিজেকে ছোট মনে করা এবং অন্যদেরকে বড় মনে করা। এ গুণটি মহান রবের খুবই পছন্দনীয়। আল্লাহর বিশেষ মর্যাদা পাওয়ার মতো একটি গুণও এটি। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত ইয়াদ ইবনে হিমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেননবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى أَوْحَى إلَيَّ: أَنْ تَوَاضَعُوا، حَتَّى لَا يَبْغِيَ أَحَدٌ عَلَى أَحَدٍ، وَلَا يَفْخَرَ أَحَدٌ عَلَى أَحَدٍ

'আল্লাহ তাআলা আমার কাছে অহি পাঠালেন যেতোমরা পরষ্পর বিনয়ী হও। যাতে কেউ কারো ওপর সীমালঙ্ঘন না করে এবং কেউ কারো ওপর গর্ব না করে।' (মুসলিম)

এ হাদিস থেকে বুঝা যায়, যে বিনয়ী হয় সে আল্লাহর আদেশ ও নিষেধের সামনে নিজেকে ছোট করে ও পূর্ণরূপে মেনে নেয়; তারপর আল্লাহর আদেশ পালনের সঙ্গে নিষেধাজ্ঞাকে বর্জন করে। আর সে মানুষের সাথেও বিনয়ী হয়। বিনয়ী হওয়ার নির্দেশের পাশাপাশি হাদিসে মানুষের উপর গর্ব ও অহংকারবশত সচ্চরিত্র ও ভদ্র আচরণ নিয়ে বড়ত্ব প্রকাশ ও গর্ব করতেও নিষেধ করা হয়েছে।

বিনয়ী হওয়ার উপকারিতা

আল্লাহর খাঁটি বান্দা হওয়ার জন্য বিনয়ী হওয়া আবশ্যক। বিনয় ও নম্রতা অবলম্বনকারীদের সম্পর্কে কোরআন-সুন্নায় সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা এসেছে। তাহলো-

১. আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন-

 وَ عِبَادُ الرَّحۡمٰنِ الَّذِیۡنَ یَمۡشُوۡنَ عَلَی الۡاَرۡضِ هَوۡنًا وَّ اِذَا خَاطَبَهُمُ الۡجٰهِلُوۡنَ قَالُوۡا سَلٰمًا

‘আর রহমানের বান্দা তারাই যারা জমিনে বিনয়ী হয়ে নম্রভাবে চলাফেরা করে আর অজ্ঞ লোকেরা তাদেরকে সম্বোধন করলে তারা বলে- ‘শান্তি’।’ (সুরা ফুরকান : আয়াত ৬৩)

২. বিনয়ী হওয়ার মাধ্যমে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা যায় এবং মর্যাদা বাড়ানো যায়। এ সম্পর্কে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

وَ مَا تَوَاضَعَ اَحَدَ للهِ اِلَّا رَفَعَهُ اللهُ

'কেউ যদি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য বিনয় অবলম্বন করে, তবে আল্লাহ তাআলা তার মর্যাদাকে বাড়িয়ে দেন।' (মুসলিম, রিয়াদুস সালেহিন)

৩. লেনদেনসহ সব কাজে ও আচার-আচরণের ক্ষেত্রে বিনয়ী হওয়া এবং কোমলতা দেখানো ইসলামের অন্যতম নির্দেশ ও শিক্ষা। যারা এমনটি করবে তাদের মর্যাদা ও উপকারিতা সম্পর্কে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন-

اِنَّ اللهَ تَعَالَىْ رَفِيْقُ يُحِبُّ الرِّفْقَ وَ يُعْطِىْ عَلَى الرِّفْقِ مَا لَا يُعْطِىْ عَلَى الْعُنُفِ

‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা ­­নিজে বিনয় অবলম্বনকারী, তিনি বিনয়কে ভালোবাসেন এবং তিনি বিনিয়/নম্রতা অবলম্বনকারীকে এত বেশি দান করেন যা কঠোরচিত্ত ব্যক্তিকে দান করেন না।’ (মুসলিম, মিশকাত)

মনে রাখতে হবে

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রকৃত ঈমানদারই বিনয়ী/সরল/ভদ্র/নম্র হয়ে থাকে। আর পাপী ব্যক্তি প্রতারক ও নীচু স্বভাবের হয়ে থাকে।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, শরিয়তের নির্দেশনায় এবং ঈমানের দাবিতে একে অপরের প্রতি বিনয়ী/নম্র হওয়া। কোরআন-সুন্নায় ঘোষিত ফজিলতের অধিকারী হওয়া।

আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুসলিমাকে বিনয়ী ও নম্র হওয়ার তাওফিক দান করুন। সব কাজে বিনয়ী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সবার প্রতি বিনয় ও নম্রতা প্রকাশ কার তাওফিক দান করুন। আমিন।