• বুধবার ০৮ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফিরে আসবোই: শেখ হাসিনা জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে

বিনা ওযরে জামাতে নামাজ না পড়ার শাস্তি

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০১৯  

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা নামাজ পড়ো নামাজিদের সঙ্গে।’ অর্থাৎ তোমারা জামাতসহকারে  নামাজ পড়ো। (সূরা বাকারা)।

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,

يَوْمَ يُكْشَفُ عَن سَاقٍ وَيُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ

خَاشِعَةً أَبْصَارُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ وَقَدْ كَانُوا يُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ وَهُمْ سَالِمُونَ

‘পায়ের গোছা পর্যন্ত উন্মুক্ত করার দিনের কথা স্মরন কর, সে দিন তাদেরকে সিজদা করতে বলা হবে, অতঃপর তারা সক্ষম হবে না। তাদের দৃষ্টি অবনত থাকবে, তারা লাঞ্ছনাগ্রস্ত হবে, অথচ যখন তারা সুস্থ অবস্থায় ছিল, তখন তাদেরকে সিজদা করার জন্য আহ্বান জানানো হত। কিন্তু তারা সাড়া দিত না। (সূরা কালাম-৪২-৪৩)।

নবী কারীম সা. ইরশাদ করেন-  ‘জামাতের সঙ্গে নামাজে সাতাশ গুণ বেশি পূণ্য নিহিত রয়েছে।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিযি)

তিনি আরো ইরশাদ করেন,  ‘একা নামাজ পড়া অপেক্ষা দু’জনে জামাতে নামাজ পড়া উত্তম। দু’জন অপেক্ষা বহুজন মিলে জামাতে নামাজ পড়া আল্লাহর কাছে আরো বেশি পছন্দনীয় এবং উত্তম।’ (আবু দাউদ)।

তিনি আরো ইরশাদ করেন,  ‘যে ব্যক্তি এশার নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়বে, সে অর্ধরাত বন্দেগির সওয়াব পাবে। যে ব্যক্তি এশা ও ফজর জামাতের সঙ্গে পড়বে, পূর্ণ রাত বন্দেগি করার পূণ্য লাভ করবে।’ (তিরমিযি)।

এজন্য নবীজি (সা.) কখনো জামাত তরক করতেন না। এমনকি অসুস্থ অবস্থায় যখন তিনি হাঁটতে পারতেন না, তখনো দুই সাহাবির কাঁধে ভর করে পা টেনে টেনে নামাজের জামাতে হাজির হয়েছেন। জামাতবিহীন একা একা নামাজ পড়েননি।

এমন কী নবীজি (সা.) তো এতটুকুও বলেছে,  ‘আমার তো মনে চায় মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে বলব এবং কাউকে নামাজ পড়াতে বলব আর আমি আগুনের অঙ্গার নিয়ে যাব, যে আজান শুনার পরও মসজিদে জামাতে হাজির হওয়ার জন্য বের হয়নি- তার ঘর জ্বালিয়ে দিই।’ (বুখারি, মুসলিম)।

তিনি আরো বলেন- ‘কোথাও যদি তিনজন মানুষ থাকে, আর তারা যদি জামাতে নামাজ না পড়ে, তাহলে শয়তান তাদের ওপর বিজয়ী হয়ে যাবে। কাজেই তুমি জামাতে নামাজ পড়াকে কর্তব্য মনে করো।’  (নাসায়ি)

তিনি আরো বলেন- ‘সেই ব্যক্তির ওপর আল্লাহর অভিশাপ, যে আজান শুনেও জামাতে উপস্থিত হয় না।’ (মাজমাউজ্জাওয়াইদ)।

চিন্তার বিষয় হলো, নবীজি (সা.) যেখানে জামাতে অনুপস্থিত মুসাল্লির ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছা করেছেন, সেখানে যে বেনামাজি, তার শাস্তি যে  কত ভয়াবহ তা সহজেই অনুমেয়।

নবীকরীম (সা.) এর নিকট এক অন্ধ ব্যক্তি এসে বলল,  ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার এমন কেউ নেই, যে আমাকে মসজিদে পৌছে দেবে।

সে নবীজীর কাছে অনুমতি চাইল বাড়িতে নামাজ পড়ার জন্য। তিনি তাকে অনুমতি দিলেন। অতঃপর অন্ধ লোকটি চলে যেতে শুরু করলে রাসূল (সা.) তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কী আজান শুনতে পাও?’ সে বলল? জ্বী- হাঁ, শুনতে পাই। তিনি (সা.) বললেন, তাহলে জওয়াব দেবে। অর্থাৎ মসজিদে উপস্থিত হবে। (মুসলিম)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘কোনো মুমিন বান্দার পক্ষে আজান শুনেও জামাতে শামিল না হওয়ার চেয়ে গলিত সীসা কানে ঢেলে দেওয়া উত্তম। (কিতাবুস সালাহ)।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেন, আজান শোনার পর বিনা ওযরে যে ব্যক্তি নামাজের জামাতে শরীক হয় না তার একাকী নামাজ পড়া কবুল হবে না। জানতে চাওয়া হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ওজর বলতে কী বুঝায়? তিনি বললেন, বিপদ অথবা রোগব্যাধি। (আবু দাউদ, ইবনেমাজাহ)।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) আরো বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ অভিশাপ দিয়েছেন (১) যে নেতাকে লোকেরা অপছন্দ করে, (২) যে নারী তার স্বামী অসন্তুষ্ট থাকা অবস্থায় রাত যাপন করে, (৩) নামাজের আজান শ্রবণ করেও যে জামাতে শরীক হয় না। (হাকেম)।

হজরত আলী (রা.) বলেন, ‘মসজিদের প্রতিবেশী লোকজনের নামাজ মসজিদ ব্যতিত সঠিক হবে না। জিজ্ঞাসা করা হলো, মসজিদের প্রতিবেশী কারা? ‘যে বাড়ীতে আজান শুনতে পায়।’ (মুসানদে আহমাদ)।

হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন যে ব্যক্তি মুসলমান হিসেবে আল্লাহর দীদার লাভ করতে চায় সে যেন প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিক মতো আদায় করে।’ কেননা আল্লাহ তোমাদের নবীর জন্য হিদায়াতের বিধানাবলি প্রবর্তন করে দিয়েছেন। আর এ নামাজগুলো হচ্ছে হিদায়াতের অন্যতম পন্থা। অনেকের মতো তোমরাও যদি নিজ গৃহে নামাজ পড়, তবে যেন নবীর পথ ছেড়ে দিলে। আর তোমরা যদি নবীর পথ ছেড়ে দাও, তাহলে পথভ্রষ্ট হবে। আমার জানা মতে, মুনাফিক বা অসুস্থ ব্যক্তি ছাড়া কেউ জামাতে শামিল হতে অবহেলা করে না। অথচ যে ব্যক্তি দু’জনের কাঁধে ভর দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত আসে, অবশ্যই সে জামাতে নামাজের জন্যই আগমন করে।

হজরত ইবনে ওমর (রা.) হতে বর্ণিত, একবার হজরত ওমর (রা.) তার খেজুর বাগান পরিদর্শনে গেলেন। তিনি তখন জামাত ছুটে যাওয়ার কাফফারা স্বরুপ খেজুর বাগানটি সদকা করে দেন।