• মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

  • || ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরোজপুর সংবাদ
ব্রেকিং:
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে

বজ্রপাত থেকে যেভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন

পিরোজপুর সংবাদ

প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০১৯  

এপ্রিল, মে-জুন এই মাস গুলোতে বৃষ্টিপাত বেড়ে যায়।তার সাথে সাথে বাড়ে বজ্রপাত।ব্জ্রপাতের কারণে মৃত্যু হয় মানুশষের।সম্প্রতিকালে পূর্বের তুলনায় বজ্রপাতে মৃতুহার অনেক বেড়ে গিয়েছে।তার কারণ হচ্ছে অনেক বেশি পরিমাণে বজ্রপাত হওয়া।

★বজ্রপাত কী?
বায়ুমন্ডলের উপরের অংশে নীচের তুলনায় তাপমাত্রা কম থাকে। এ কারনে অনেক সময় দেখা যায় যে, নীচের দিক থেকে উপরের দিকে মেঘের প্রবাহ হয়। এ ধরনের মেঘকে থান্ডার ক্লাউড (Thunder Clouds) বলে। অন্যান্য মেঘের মত এ মেঘেও ছোট ছোট পানির কনা থাকে। আর উপরে উঠতে উঠতে পানির পরিমান বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ ভাবে বৃদ্ধি পেতে পেতে পানির পরিমান যখন ৫ মিঃমিঃ এর বেশী হয়, তখন পানির অণুগুলো আর পারস্পারিক বন্ধন ধরে রাখতে পাড়ে না। তখন এরা আলাদা (Disintegrate) হয়ে যায়। ফলে সেখানে বৈদ্যুতিক আধানের (Electric Charge) এর সৃষ্টি হয়। আর এ আধানের মান নিচের অংশের চেয়ে বেশী হয়। এরকম বিভব পার্থক্যের (Potential difference) কারনেই ওপর হতে নিচের দিকে বৈদ্যুতিক আধানের নির্গমন (Transmission) হয়। এ সময় আমরা আলোর ঝলকানি (Lightning) দেখতে পাই।

আর ক্রিয়ার সময় উক্ত এলাকার বাতাসের প্রসারন (Expansion) এবং সংকোচনের (Contraction) ফলে আমরা বিকট শব্দ শুনতে পাই। এ ধরনের বৈদ্যুতিক আধানের নির্গমন দুটি মেঘের মধ্যে অথবা একটি মেঘ এবং ভূমির মধ্যেও হতে পারে।

★বজ্রপাত বেড়ে যাবার কারণঃ
*বায়ুমন্ডলের নীচের অংশে ওজন(গ্যাস) এর পরিমান দিন দিন বেড়ে চলছে।যার ফলে বজ্রপাত আরো বেশি হচ্ছে।

*বনায়ন না করে উল্টো বড় বড় গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে এজন্য, বসত বাড়ির উপরে বজ্রপাত বেড়ে প্রাণহানি বাড়ছে।

★বজ্রপাতে কেউ আক্রান্ত হলে করণীয়ঃ
কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত হলে,সাথে সাথে তাকে ধরা থেকে বিরত থাকুন। আগে বজ্রপাত শেষ হয়েছে কিনা লক্ষ করুন।
তারপর পরীক্ষা করুণ তার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে কিনা।
**যদি শ্বাস প্রশ্বাস চলে তবে তাকে দ্রুত হাস্পাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করুন।বজ্রপাতের চিকিৎসা অপ্রতুল।বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপজেলা পর্যায়ে বার্ন বা ইলেক্ট্রিক শক এর চিকিৎসা দেয়া হয়। ওষুধ এবং যন্ত্রপাতির অভাবে।

**যদি শ্বাস প্রশ্বাস না থাকে। তবে সিপিআর দিতে দিতে নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে।
সিপিয়ার কীভাবে দিবেন তা সবার জানা উচিত
যে কোনো মানুষ সিপিআর দিতে পারেন, যদি আগে থেকে ধারণা নিয়ে থাকেন। সবার উচিত সিপিআর সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখা।

প্রথমত যদি কফ-রক্ত বা অন্য কোনো কিছু শ্বাস নালীর পথে আটকে থাকে, তবে তা সরিয়ে শ্বাস নেয়ার পথ করে দিতে হবে এবং সিপিআর প্রয়োগ শুরু করতে হবে।

তারপর,ব্যক্তির এক পাশে এসে বুক বরাবর বসে এক হাতের তালুকে বুকের মাঝ বরাবর স্থাপন করতে হবে। তার ওপর অপর হাত স্থাপন করে ওপরের হাতের আঙুল দিয়ে নিচের হাতকে আঁকড়ে ধরতে হবে। হাতের কনুই ভাঁজ না করে সোজাভাবে বুকের ওপর চাপ দিতে হবে।

এমন গতিতে চাপ প্রয়োগ করতে হবে যেন প্রতি মিনিটে ১০০-১২০টি চাপ প্রয়োগ করা যায়। এভাবে প্রতি ৩০টি চাপ প্রয়োগের পর আক্রান্তের মুখে মুখ রেখে দুবার ফুঁ দিতে হবে।   
এমনভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে যেন বুকের পাঁজর ২ থেকে ২.৫ ইঞ্চি নিচে নামে। যাতে চাপ হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ পড়ে।

হাসপাতালে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত বা জ্ঞান ফিরে আসা অথবা স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস চালু হওয়া পর্যন্ত একইভাবে সিপিআর চালিয়ে যেতে হবে।

জ্ঞান ফিরলে বা শ্বাস-প্রশ্বাস চালু হলে তাকে রিকভারি পজিশনে (একপাশে কাত করে) শুইয়ে দিতে হবে। এর পর হাসপাতালে নিয়ে পরবর্তী চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

★প্রতিরোধঃ
বজ্রপাতে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা যেহেতু বাংলাদেশে অপ্রতুল তাই, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গুলো ভালোভাবে জেনে রাখতে হবে।
১.বজ্রপাতের সময় উচু গাছের নীচে দাড়াবেন নাঃকোথাও বজ্রপাত হলে উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এসব স্থানে আশ্রয় নেবেন না। খোলা স্থানে বিচ্ছিন্ন একটি যাত্রী ছাউনি, তালগাছ বা বড় গাছ ইত্যাদিতে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি থাকে।

২.দালান বা পাকা ভবনের নীচে আশ্রয় নেবে বজ্রপাতের সময়

৩.ঘরের ভেতরে থাকলে জানলা, রড এর কোনো বস্তু, ফোন ব্যবহার এগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে

৪.গাড়ির ভেতরে থাকলে গাড়ি থামিয়ে নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে।তবে কোনো বিদ্যুৎ এর খুটি বা বড় গাছের নীচে দাঁড়ানো যাবে না।

৫.খোলা মাঠে থাকলে নীচে হয়ে উপুড় হয়ে থাকুন। বজ্রপাত যে মৌসুমে হয় অই মৌসুমে মাঠে কাজ করার সময় রাবারের জুতা ব্যবহার করুন।

৬.পানি থেকে দূরে থাকুনঃ
বজ্রপাতের সময় আপনি যদি ছোট কোনো পুকুরে সাঁতার কাটেন বা জলাবদ্ধ স্থানে থাকেন তাহলে সেখান থেকে সরে পড়ুন। পানি খুব ভালো বিদ্যুৎ পরিবাহী।

৭.বজ্রপাতের সময় পরস্পর থেকে দূরে থাকুনঃকয়েকজন মিলে খোলা কোনো স্থানে থাকাকালীন যদি বজ্রপাত শুরু হয় তাহলে প্রত্যেকে ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে সরে যান। কোনো বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকে তাহলে সবাই এক কক্ষে না থেকে আলাদা আলাদা কক্ষে যান।

৮.বাড়ি সুরক্ষিত করুনঃ
আপনার বাড়িকে বজ্রপাত থেকে নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। এজন্য আর্থিং সংযুক্ত রড বাড়িতে স্থাপন করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ নিতে হবে। ভুলভাবে স্থাপিত রড বজ্রপাতের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।

বজ্রপাতের ধর্ম হচ্ছে এটি অপেক্ষাকৃত উচু পরিবাহির মাধ্যমে মাটিতে নেমে আসে।এবং এই পথের মাঝে যদি আপনি পড়ে যান তবে আপনি মৃত্যু বরণ করবেন।তাই আপনি যেখানেই থাকবেন না ক্যানো উপরোক্ত সতর্কতা গুলো মেনে চলবেন।